ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০, হল-পরীক্ষা বন্ধ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪৯ এএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৮:৫১ এএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিন শিক্ষকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাতের এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সকল পরীক্ষা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম রবিন গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক সাকিব মোশাররফ ধ্রুব গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ ১০ জন আহত হন। আহতদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড.ফিরোজ আহমেদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হলের সহকারী প্রভোস্ট ইকবাল হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আল আমিন শিকদার।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সহকারী প্রভোস্ট ইকবাল হোসেন জানান, শনিবার দিবাগত রাতের উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য রোববার সন্ধ্যায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এবং প্রভোস্টবৃন্দ  বসেছিলাম। এমতাবস্থায় কিছু ছাত্র এসে জানায় তাদেরকে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে ফের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং এ সময় তিনি নিজেও আহত হন। সেই সঙ্গে প্রভোস্ট ড. ফিরোজ আহমেদ মাথায় আঘাত পান।

সংঘর্ষে আহত ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, বিবাদমান দুই গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষ থামাতে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এসময় তাকে লক্ষ্য করে মাথায় আঘাত করা হয়।

সংঘর্ষের সার্বিক বিষয়ে জানতে ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট কাউসার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি একাধিকবার ফোন রিসিভ করেও ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নেওয়াজ মো.বাহাদুর বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সবাইকে হল ত্যাগ করার নির্দেষ দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ হেফাজতে সবাইকে হল থেকে মাইজদীতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকেই দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে রাত দেড়টাত দিকে এক ঘন্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এতো রাতে আমরা কোথায় যাবো?

উল্লেখ্য, শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে প্রকাশ্যে ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি বড় আকার ধারণ করে। পরে এ নিয়ে রোববার রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ আব্দুস সালাম হলে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত পর্যন্ত উভয় গ্রুপের মধ্যে থেমে থেমে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। উভয় পক্ষ একে অপরকে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে অন্তত ৮/১০ জন আহত হয়। 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হলের ১৪/১৫টি রুমের দরজা, জানালা, চেয়ার, টেবিল, ফুলের টব এবং বাথরুমের বেসিন ভাঙচুর করে। এসময় হলে থাকা ছাত্রদের ল্যাপটপ, মোবাইল ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরি হয়ে যায়।

এনএস/