ঢাকা, সোমবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩২

ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে সুস্থ থাকবেন যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৮ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

বর্তমানে ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে সুস্থ সবল মানুষও নাজেহাল। ভেবে দেখুন শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক মানুষ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের অবস্থা কী? কাজেই এমন গরমে শুধু এসির উপর ভরসা না করে এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে৷ নইলে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন৷

ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে কি ধরনের অসুস্থতা হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক-

* এমন গরমে অতিরিক্ত কাজ, খেলা বা ব্যায়াম করলে পেশিতে তীব্র ব্যথা হতে পারে৷ একে বলে হিট ক্র্যাম্প৷

* ঘাম ও চড়া রোদের কারণে র‌্যাশ বেরোতে পারে চামড়ায়৷

* রান্নারান্না সেরেই এসি চালিয়ে বিশ্রাম নিলে, বাইরে থেকে এসে ঘাম না শুকিয়ে ঠাণ্ডা পানি খেলে বা ঠাণ্ডা ঘরে বসে পড়ার মতো অনিয়ম করলে জ্বর, সর্দি ও কাশি এড়ানো খুবই কঠিন৷

* ভাদ্রের রোদের দিন হিট এক্সারসানে খুব বেশি ঘাম হয়৷ রোগী ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েন৷ দ্রুত শ্বাস পড়ে৷ তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা না নিলে এখান থেকে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা প্রবল৷

* হিট সিনকোপ নামের সমস্যায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।

* হিট স্ট্রোকে তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হঠাৎ শরীরের তাপ বেড়ে যেতে পারে৷ তা ১০৫ ডিগ্রির উপরও হতে পারে৷ এটা কিন্তু জ্বর নয়৷ এর সঙ্গে ঘাম হয় না বলে শরীরের তাপ বেরোতে পারে না৷ এর ফলে বিপদ বাড়ে৷

* ভাদ্রে সারাদিন খুব ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যার দিকে ঝড়বৃষ্টি এলে হঠাৎ ৭–৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে যায়। অ্যাজমা রোগীদের এই সময় যত্নে রাখুন। তাপমাত্রার ওঠানামায় এদের অ্যাটাক হতে পারে৷

এসব বিপদ ঠেকাতে যা করবেন 

* প্রসাব হলুদ হলে বা প্রসাবের পরিমাণ কমে গেলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান৷ পানি খাওয়ায় বিধি-নিষেধ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

* ডিহাইড্রেশন এড়াতে কফি ও কোমল পানীয় খাওয়া কমান৷ হালকা খাবার খান, পেট একটু খালি রাখুন৷ বেশি খেয়ে রোদে বেরুবেন না আবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়েও পড়বেন না৷

* চড়া রোদ এড়ানো সম্ভব না হলে বেরুনোর আগে এক গ্লাস পানি খান৷ প্রেসার-সুগার না থাকলে লবণ-চিনির পানি বা ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন৷ ডাবের পানি, টাটকা ফলের রস বা ঘোলও খেতে পারেন৷

* রোদে বেরুলে ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ও হালকা সুতির পোশাক পরুন।

* রোদে বা গরমের মধ্যে অনেকক্ষণ টানা কাজ করবেন না৷ কাজের ফাঁকে ঠাণ্ডা জায়গায় বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরুন৷

* হাঁপানি রোগীরা অবস্থা বুঝে এই সময় ইনহেলারের একটা পাফ নিন৷ বা যদি মনে হয় কষ্ট শুরু হতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের ডোজ বাড়াতে পারেন।

* পেশিতে ব্যথা হলে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় গিয়ে ব্যথা না কমা পর্যন্ত বিশ্রাম নিন৷ ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন।

* হিট এক্সারশন হলে গরম থেকে সরে গিয়ে বিশ্রাম নিন৷ কষ্ট না কমা পর্যন্ত স্যালাইন পানি বা ডাবের পানিও খেতে পারেন৷ কষ্ট কমতে শুরু করার পর হাত-মুখ ধুয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন৷

* অজ্ঞান হয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি তাকে গরম থেকে সরিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে বার বার শরীর মুছে এবং মাথা ধোয়াতে থাকুন৷ ফ্যান বা এসি চালিয়ে দিন৷ স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে গোসলও করাতে পারেন৷ পানি শূন্যতা পূরণের জন্য ডাবের পানি কিংবা ও্যর স্যালাইন খাওয়ান। বেশি জটিল মনে হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

এএইচ/