ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে যাচ্ছে বিআরডিবির কর্মীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

চাকরি স্থায়ীকারণ ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে গেল তিন দিন ধরে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)র কর্মীরা। 
কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলছেন, আজকের মধ্যে দাবি আদায় না হলে আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে যাবেন তারা। আজ মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিআরডিবি’র কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারীরা সাংবাদিকদের এতথ্য জানান।
প্রকল্পভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মো: আব্দুল ওয়াহেদ একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ১৫ টি প্রকল্পের অধীনে ৮ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী চাকরি করছি। নিয়োগের সময় বলা হয়েছিল, ৫ বছর চাকরি করার পর স্থায়ীকরণ করা হবে। কিন্তু ২০ বছর অতিবাহিত হলেও সেই কথার বাস্তবায়ন হয়নি।’
‘এমনকি গত ২ বছর ধরে বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কোন উপায় না দেখে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজকের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আগামী কাল থেকে আমরণ অনশনে যাবো।’
সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি তিনটা হলো, চাকরি স্থায়ীকরণ করা। স্থায়ীকরণের পূর্ব পর্যন্ত শতভাগ বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করা। দারিদ্র বিমোচনে বিআরডিবির কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু পল্লী উন্নয়ন অধিদপ্তর ঘোষণা দেওয়া।
তিনি আরো বলেন, এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে বেতন ভাতা দেওয়া হলেও গত ৩ বছর ধরে বিআরডিবির কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দুই থেকে তিন বছর ধরে বেতন ভাতা না পেয়ে বিআরডিবির কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ৮ হাজার কর্মীর মধ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ কর্মীকে ঠিকই বেতন দেওয়া হচ্ছে। এটা এক ধরনের বৈষম্য। যে কারণে বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
এবিষয় জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো: গিয়াস উদ্দিন আহমেদ একুশে টেলিভিশনকে বলেন, তারা মানবেতর জীব যাপন করছে। আমরা সেটা বুঝতে পারছি। আমরা আলোচনা করেছি যে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায়। তবে তাদের নিয়োগের আগেই বলা হয়েছিলো যে, প্রকল্প থেকে যদি লাভ আসে তাহলে তাদের বেতন প্রদান করা হবে। ‍কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প লাভের মুখ দেখেনি,যে কারণে বেতন বন্ধ রয়েছে। এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমি চাইলে একদিনে সমাধা করতে পারবো না। তবে কিছু কিছু এলাকায় বেতন দেওয়া হচ্ছে।

আন্দোলনকে ভিত্তিহীন বলে এই মহাপরিচালক বলেন, যারা আন্দোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন,যারা আন্দোলন করছে তাদের কোন সংগঠন নয়। আসলে একটি মহল সুবিধা নেওয়ার জন্য এই আন্দোলন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য প্রকল্পসমুহ: একটি বাড়ি একটি খামার (৩য় সংশোধিত)” শীর্ষক প্রকল্প, সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি-৩য় পর্যায় উন্নয়ন প্রকল্প, ‘অংশীদারিত্বমূলক পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-৩য় পর্যায় (পিআরডিপি-৩),দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প,পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প (পজীপ) ২য় পর্য়ায় উত্তরাঞ্চলের দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ প্রকল্প (সংশোধিত), উন্নত জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন’’শীর্ষক প্রকল্প,‘দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে গঙ্গাচড়া দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুগ্ধ কারখানা স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প।  

টিআর/