ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

কাদের নাকি রওশন, কে জাপার চেয়ারম্যান?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০৭ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:১২ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় পার্টিতে চলছে অস্থিরতা। আলোচনা আর সমালোচনা যেন কোনোভাবেই পিছু ছাড়ছে না দলটির। দলীয় পদ পদবির বিতর্ক আর পদত্যাগ নিয়ে চরম অস্থিরতায় রয়েছে দলটি। এবার নতুনভাবে চরম বিতর্কের মধ্যে পড়েছে এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টি।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বেঁচে থাকতেই তার দল জাতীয় পার্টি বিভিন্ন সময় কয়েক ভাগে ভাগ হয়েছিল। এখন পারিবারিক এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থেকে দলটিতে বিভক্তি আবারও দৃশ্যমান হচ্ছে।

এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ভাই জিএম কাদের দুজনেই নিজেকে দলটির চেয়ারম্যান বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই দুই শীর্ষ নেতাই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হতে চেয়ে সংসদে স্পিকারের কাছে চিঠিও দিয়েছেন। তাই এসব ঘোষণায় দলটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে বলে এর নেতাকর্মীদের অনেকে বলেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছে দলটির একাংশ। এর কয়েক ঘণ্টা পরে দলটির আরেক অংশ জিএম কাদেরকে তাদের বৈধ চেয়ারম্যান বলে দাবি করে।

এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে দলটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন জিএম কাদের। আজ জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এই পদটি শূন্য ছিল। এরপর বিরোধীদলীয় নেতার পদটি পূরণ করার দরকার ছিল। বিরোধীদলীয় নেতার পদটি নিয়ে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, আর যেহেতু আগামী ৮ তারিখে সংসদ শুরু হচ্ছে তার আগেই আমাদের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন ছিল। এ নিয়ে আমাদের প্রেসিডিয়াম মিটিংয়েও সর্ব সম্মতি ছিল যেন আমি বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব নেই।

জিএম কাদের বলেন, পার্লামেন্টে আমাদের ২৫ এমপি আছে, আমি সবার কাছ থেকে মতামত নিয়েছি, এটা নিয়ে সভা করেছি। সেই সভায় ১৫ জন আমাকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছেন। গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিরোধীদলীয় নেতা হতে আমি স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।

এ সময় তিনি দলীয় গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা তুলে ধরে বলেন, আমাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও এভাবে নেতা নির্বাচন করেছিলেন।

এ সময় দলে জিয়াউদ্দিন বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে, রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে দলটির একাংশের নেতারা রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান ঘোষণার পাশাপাশি তাদের আরেকজন শীর্ষ নেতা জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদে থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

এই সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদও বক্তব্য রেখেছেন। তিনি জাতীয় পার্টির ঐক্য ধরে জন্য নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানান।

রওশন এরশাদ বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছেন জনগণের সেবা করার জন্য। কিন্তু জাতীয় পার্টির ঐতিহ্য দুইবার ভাগ হয়েছিল। এবারও কী সেরকমই হতে যাচ্ছে নাকি?

তিনি বলেন, আমি আশা করবো আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে পার্টি করবো। যারা পার্টি ছেড়ে চলে গেছেন তাদেরকে আমি আহ্বান জানাই তারা যেন আবার পার্টিতে ফিরে আসেন। তাহলে আমারা পার্টিটাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবো।

রওশন এরশাদের গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এরশাদের মৃত্যুতে রংপুরের একটি সংসদীয় আসন শূন্য হওয়ার পর সেখানে উপনির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেও জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা দ্বন্দ্বের বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসে।