ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

‘আমাদের কথা মতো চলতে হবে, না হলে সাইজ করে দেব’

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

সাতক্ষীরার আশাশুনি সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের ওপর তিন দফা হামলা ও তার অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, অধ্যক্ষ মামলা দেওয়ার পর আশরাফুজ্জামান তাজ ও তার সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা আল মামুনকে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান এ বিষয়ে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি তার কয়েকজন সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে নিজ কক্ষে অফিসিয়াল কাজ করছিলেন। এ সময় এক যুবক এসে তাকে সালাম দিয়ে রুমের বাইরে আসতে বলে।

তিনি বলেন, বাইরে আসার পরপরই তার সামনে আরেকটি ছেলেকে তারা বেদম মারধর করতে থাকে। তিনি বিষয়টি কী তা জানতে চাইলে তারা জানায় সে সাতক্ষীরা থেকে একটি মেয়েকে এনে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে অনৈতিক আচরণ করেছে। অধ্যক্ষ ছেলেটিকে মারধর না করে তার কাছে দিতে বলেন। এ সময় তিনি তার অভিভাবকদের ফোন করে ডেকে আনেন। একই সময়ে সেখানে পুলিশও পৌঁছায়। পরে মুচলেকা নিয়ে ওই যুবককে ছেড়ে দেয় পুলিশ।  

অধ্যক্ষ জানান, ছেলেটিকে তাদের হাতে কেনো দেওয়া হলো না এই কৈফিয়ত তলব করে তার ওপর হামলা করে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজ ও তার সহযোগী শাওন, আল মামুন ও সাইফুল্লাহসহ ৭/৮ জন ছাত্রলীগ কর্মী। 

এ সময় তারা তার কক্ষ, জানালার গ্লাস, চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। ইটপাটকেল ছুড়ে তাণ্ডব চালায় তারা। এভাবে পরপর তিনবার তিনি এই হামলার শিকার হন। তাকে চড় কিল ঘুষি মেরে ফেলে দেওয়া হয়।  

তিনি জানান, সহকর্মী শিক্ষকরা হামলাকারীদের হাত থেকে তাকে রক্ষার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সহকর্মীরাও কম-বেশি লাঞ্ছিত হন। এ সময় তাজ বলে, এখানে চাকরি করতে হলে আমাদের কথা মতো চলতে হবে। না হলে সাইজ করে দেব।

আক্ষেপ করে অধ্যক্ষ বলেন, এসব সন্তানতূল্য ছেলেদের হাতে বারবার লাঞ্ছিত হয়ে আমরা যেন মরে গেছি। তিনি জানান, বিষয়টি তিনি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছেন। একই সাথে তাদের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই অধ্যক্ষ।

ওসি আবদুস সালাম আরও জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। মামলার পর সোমবার রাতেই আশরাফুজ্জামান তাজ ও আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান জানান, তাজ ও অন্যদের বিরদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আই/