ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনের কবলে শতাধিক বাড়িঘর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫২ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৮:৫৩ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

প্রতিবারের ন্যায় এবারও বন্যার সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপূত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদী অববাহিকার ৯ লাখ ৫৮ হাজার বানভাসি মানুষ।পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। ফলে গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে শতাধিক বাড়িঘর ব্রহ্মপূত্রের গর্ভে বিলিন হয়েছে।
 
ভাঙ্গনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন,৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৩টি মসজিদ,১টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ১টি আশ্রয় কেন্দ্র। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষজন পরিবার ও গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ভাঙ্গনের এ অবস্থায়ও জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা ব্রহ্মপূত্র নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডুবে যাবে এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
 
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন।এ ইউনিয়নের পাশ দিয়ে ছুটে চলেছে খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদী।গত ৩ থেকে ৪ বছরের ভাঙ্গনে এ ইউনিয়নের তিনভাগের দুইভাগ এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। 

গত রোববার দুপুরে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নয়াডারা, কামারটারী, পালের ভিটা, হাতিয়া ভবেশ গ্রামসহ ভাঙ্গনকবলিত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষজন তাদের বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
 
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন,‘আমাদের সব চলে গেছে। আমরা এখন কোথায় থাকব তাই ভাবছি।’ ব্রহ্মপূত্রের পাড়েই বাবা ও দাদার কবর ছিল যা আজ নদীতে চলে গেছে বলে জানান তিনি। 

নয়াদাড়া গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন,‘চার একর ধানি জমি ছিল, এখন সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। রাস্তা কিংবা অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে বাকি জীবনটা কাটাতে হবে।’

হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন,‘ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে সাববাঁধ নির্মাণ করা হয়। এখন সেটিও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে।এভাবে নদীভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে মূল বাঁধসহ ইউপি ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে না।’

কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন,‘ভাঙ্গনরোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
এমএস/কেআই