ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সরকারি তালিকায় ৪৭ হাজার নদী দখলদার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৫ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

রাজধানীসহ দেশের ৬১টি জেলার নদনদীগুলোর দখল করে রেখেছে ৪৭ হাজার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান। এসব দখলদারদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।  তালিকায় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ প্রভাবশালী বহু লোকজনের নাম রয়েছে। নদী দখলদাররা দখল ফিরে পেতে মামলা করতে চাইলে প্রস্তুত আছেন বলেও জানান আবেদনকারীর আইনজীবী।

দখলদারদের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়,বেশির ভাগ স্থানীয় ব্যক্তি নদী-খাল দখল করে দোকানপাট,ঘরবাড়ি করেছেন। আর রাজধানীর উপকণ্ঠে শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু নদ-নদীতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নদীর জায়গা দখল করে রেখেছে। দখলে জর্জরিত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কর্ণফুলী নদী,চাক্তাই খালসহ দেশের প্রায় সব বড় নদ-নদী, খাল-বিল।

বুড়িগঙ্গার তীরে বেড়ে উঠা স্থানীয় বাসিন্দাদের ছেলেবেলার সুখকর অনুভূতিগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। এলকার বাসিন্দারা বলেন, আগে  এই নদীর পানি অনেক পরিস্কার ছিলো, আমরা খাবার পানি হিসাবে ব্যবহার করতাম। এখন নদীর দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে এখানে বসবাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
 
বুড়িগঙ্গাসহ দেশে প্রবহমান নদীর সংখ্যা ৪০৩টি। দখল-দূষণে এখন প্রায় সব নদীরই বেহাল দশা। এ অবস্থায় নদী বঁচাতে ১৭ দফা নির্দেশনা দিয়ে  ঐতিহাসিক রায় ঘোষনা করেন হাইকোর্ট । নদীকে জীবন্তসত্তা ঘোষণা দিয়ে দখলদারদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশের নির্দেশনাও দেওয়া হয়। 

এবিষয় জানতে চাইলে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার একুশে টেলিভিশনকে বলেন, রাজধানীসহ দেশের ৬১টি জেলার প্রায় ৪৭ হাজার দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নদী দখলে নাম এসেছে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ প্রভাবশালীদের। তালিকায় সবচেয়ে বেশি দখলদার চট্টগ্রাম বিভাগে।

মামলার বিষয় রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, হাইকোর্টের ১৭ দফা নির্দেশনার একটি হলো-কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নদ-নদী দখলের অভিযোগ থাকলে তিনি সব ধরনের নির্বাচনে অংশ নেয়ার অযোগ্য হবেন। তবে আদেশ পেলেই ব্যবস্থা নেয়ার হবে। দখলদারের তালিকায় যাদের নাম এসেছে তারা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে।

নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন,একই সময়ে পরিবেশ ও নদী সংক্রান্ত আইন, বিধিমালা প্রণয়ন ও নতুন নতুন সংস্থা হলেও দখল বা দূষণ হ্রাসে দৃশ্যত কোনো প্রভাব পড়েনি। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয় ২০১৬ সালে কলম্বিয়ার হাইকোর্ট প্রথম নদীকে জীবন্ত সত্ত্বাা ঘোষনা করে। এরপর ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যার হাইকোর্ট ও পরবর্তীতে বাংলাদেশের হাইকোর্ট  নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষনা করা হয়।

 টিআর/