ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ব্রিটেনে বিসিএ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে ২৭ অক্টোবর 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৮ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১০:৩৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

ব্রিটেনের বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাষ্টির বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটার্রাস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ১৪তম বিসিএ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করতে যাচ্ছে।বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাষ্ট্রির নানা সাফল্য বিশেষ করে রেষ্টুরেন্ট এবং শেফদের আলোকিত যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরপ বিসিএ ধারাবাহিকভাবে এই সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে আসছে। আগামী ২৭ অক্টোবর তিনটি ক্যাটাগরীতে অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ প্রদান করা হবে। 

জানা যায়,বিসিএ রেষ্টুরেন্ট অফ দ্যা ইয়ার, বিসিএ শেফ অফ দ্যা ইয়ার এবং বিসিএ অনার অফ দ্যা ইয়ার এ তিন ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। এছাড়াও কমিউনিটির বিশিষ্টজনদের কারী ইন্ড্রাষ্টির নানা কাজে সহযোগিতার জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।

এই উপলক্ষে ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টায় লন্ডনের তারকা হোটেল ম্যারিয়েট হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৪তম বিসিএর অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ কে সামনে রেখে বিসিএর নানা আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, এই বছরের পুরষ্কারের শিরোনাম হচ্ছে বিসিএ: দ্য হোম অফ গ্রেট ব্রিটিশ কারি’।অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বিসিএ কারী ইন্ড্রাষ্টির বিবদমান নানা সমস্যা এবং সম্ভাবনার একটি মৌলিক বার্তা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে চায়।১২,০০০ এরও অধিক ব্রিটিশ বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্ট এবং ক্যাটারার্সদের প্রতিনিধিত্বকারী শক্তিশালী সংগঠন বিসিএ মনে করে দীর্ঘদিন থেকে চলমান ‘ব্রেক্সিট ইস্যু’কারী শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পগুলোকে প্রায় পঙ্গু করে দিয়েছে।অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় যে, ব্রিটেনের রাজনীতিবিদগণ এই একটি বিষয়ে মনোনিবেশ স্থির করে রেখেছেন, অন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে না বা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। এই অনিশ্চয়তা ব্রিটেনের কারি শিল্পকে প্রায় ধংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসছে।

বিসিএ দীর্ঘদিন থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহে কারীশিল্পের ষ্টাফ সংকট সমস্যা নিরসনের জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।যাতে করে কারী ইন্ড্রাষ্টি বিবদমান সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠে ব্রিটেনের ‘কারী লাভারস‘দের কাছে এর স্বাদ পৌঁছে দিতে এবং সর্বোপরি জাতীয় অর্থনীতিতে আরও জোরালো অবদান রাখতে পারে। কারী ইন্ড্রাষ্টির সমস্যা, দাবী দাওয়া বাস্তবায়নে বিসিএ‘র বিভিন্ন কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়-বিসিএ ২০০৮ সালের ১০ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে ‘সেইভ দ্যা কারী’ শিরোনামে একটি বিশাল বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং স্থানীয় এমপিদের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করে। বিক্ষোভে কারী শিল্প সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হোম সেক্রেটারীর ‘বিন্দালু ভিসা‘র পরিকল্পনা বিসিএ‘র আন্দোলনের আরেক বিজয়। 
জানা গেছে,স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেল নতুন পয়েন্ট ভিত্তিক ইমিগ্রেশন সিস্টেম প্রবর্তন করবেন।  রেষ্টুরেন্টগুলো যাতে করে প্রয়োজনীয় দক্ষ শেফ আনতে পারে সেদিক বিবেচনায় রেখে ইমিগ্রেশনের নিয়মগুলোতে পরিবর্তন করছেন। বিসিএ মনে করে প্রীতি প্যাটেল এর ঘোষণা সংগঠনটির দীর্ঘ লবিং ও আন্দোলনের আরও একটি বিজয়।

এছাড়াও বিসিএ কারী শিল্পের সমস্যা থেকে উত্তোরণে সরকারের কাছে সুনিদৃষ্ট প্রস্তাবনা রেখে আসছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বিসিএ চায় সরকার নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জরুরীভিত্তিতে বিবেচনায় নিয়ে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান করুক:
১.বিসিএ মনে করে সর্ট ওক্যুপেশন লিষ্ট এ লিপিবদ্ধ তালিকাতে স্কিলড স্টাফ এর বার্ষিক বেতন ২৯,৫৭০ পাউন্ড থেকে হ্রাস করা জরুরী। একটি ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি অবাস্তব সিদ্ধান্ত।বিসিএ মনে করে বার্ষিক আয় ২০,০০০ পাউন্ড এর মধ্যে নির্ধারণ জরুরী।

২. বিসিএ ‘ডকুমেন্টহীন‘ কর্মীদের ‘ওয়ার্ক রিপ্লেইসমেন্ট’ এর আওতায় এনে তাদেরকে কারী ইন্ড্রাষ্টিতে কাজ করার সুযোগ দেবার জোর দাবী জানিয়ে আসছে।বাংলাদেশি কারী শিল্পের সংকট সময়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করলে কারীশিল্পের বিবদমান ষ্টাফ সংকট হ্রাস পাবে বলে বিসিএ মনে করছে। 
৩. বিসিএ কারী শিল্পের দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জরুরী ভিত্তিতে একটি ন্যাশনাল এপ্রেনটিশীপ স্কিম গ্রহণের আহবান জানাচ্ছে।যেখানে বিভিন্ন দেশের জাতিগত খাবার তৈরী, সরবরাহে বিনিয়োগ এবং সুনিদৃষ্ট কাজের জন্য দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।এটি স্থানীয় মানুষের জন্য ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানও তৈরি করবে।এ বিষয়ে বিসিএ সরকারের সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করতে আগ্রহী।

সংগঠনের সভাপতি এম এ মুনিম বলেন,‘আমরা বিশ্বাস করি,কারী শিল্পের মাধ্যমে আমরা ব্রিটেনের খাবার সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি।এবং এই শিল্পের আলোকিত দিকগুলো মূলধারায় তুলে আনতে এটি হচ্ছে ধারাবাহিক কাজের অন্যতম অংশ।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক মিটু চৌধুরী, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু, চিফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল, সাবেক প্রেসিডেন্ট এম কামাল ইয়াকুব, পাশা খন্দকার এমবিই, বিসিএ এওয়ার্ড কমিটির জয়েন্ট কনভেনার হেলাল মালিক, শেফ বাচাই কমিটির প্রধান আতিক রহমান. লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব এর সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, বিসিএ’র অর্গানাইজিং সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম, কোবরা বিয়ারের সিনিয়র ডাইরেক্টর স্যামসন সুহেল, লোলো ইট এর ল্যে জোন্স, কিং ফিশার এর সিনিয়র ডাইরেক্টার মিষ্টার পাটেল।এ বছরের অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠোপোষক হলো কোবরা বিয়ার, কিংফিশার বিয়ার, সুপার পোলো, শেফ অনলাইন, লোলো ইট, স্কোয়ার মাইল, কানসারা. গান্ধি ওরিয়েন্টাল, ব্র্যান্ডপ্যাক্স, জাইরো ফুডস লিমিটেড, ঢাকা রিজেন্সি, রাধুঁনি, পেইটাপ, অ্যারোমা আইস ক্রীম,বাংলা টাউন ক্যাশ এন্ড কারী, হ্যাপোসা ও মধুস।
এমএস/কেআই