ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কেমন ছিল আওরঙ্গজেবের শাসনামল?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অবশ্য মুঘল বংশের শেষ সফল সম্রাট বলা যায় তাকে। মুঘল সালতানাতের গৌরবময় ইতিহাসে স্বমহিমায় দীপ্তিমান আওরঙ্গজেব। তিনি ছিলেন বাবর, হুমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গীর এবং শাহ জাহানের পরে ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট। তিনি সম্রাট শাহজাহানের পুত্র।

আওরঙ্গজেবের জন্ম হয়েছিল ১৬১৮ সালের ৩ নভেম্বর। সব ভাইদের মধ্যে আওরঙ্গজেব ছিলেন সবচেয়ে চতুর, সমরকুশল ও কূটনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন। তাই পিতার জীবনের সায়াহ্নকালে অমোঘ নিয়তিস্বরুপ উদ্ভূত উত্তরাধিকার যুদ্ধে একে একে সব ভাইকে পথ থেকে সরিয়ে সিংহাসনের চূড়ান্ত উত্তরাধিকার হন আওরঙ্গজেব। কেমন ছিল আওরঙ্গজেবের শাসনামল? চলুন জানা যাক সেই সম্পর্কেই।

১৬২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শাহজাহান নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করার পরে তিনি আগ্রার দুর্গে বসবাস শুরু করেন। সেখানে আরবি এবং ফারসি ভাষায় তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন। তার দৈনিক ভাতা হিসেবে পাঁচশত রুপি নির্ধারণ করা হয় যেটা তিনি ধর্ম ও ইতিহাস শিক্ষার পেছনে খরচ করেন।

আওরঙ্গজেব একজন হাফিজ ছিল এবং সম্রাট হওয়ার সত্ত্বেও তিনি সাধারণ জীবন যাপন করেছিলেন। তিনি টুপি এবং নিজের হাতের লিখা কুরআন বিক্রি করতেন আর রাজ্যের সম্পদ স্পর্শ করতেন না।

মুঘল সম্রাট হিসেবে আওরঙ্গজেবের শাসনামল বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে সাম্রাজ্যের সীমানা বহুদূর বিস্তার করেন। তার শাসনামলে ভারত চীনকে ছাড়িয়ে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে গড়ে উঠেছিল।

আওরঙ্গজেব শাসক হিসেবে বিতর্কিত এবং সমালোচিত ছিলেন। তার পূর্বসূরিদের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতি উপেক্ষা করে তিনি ভারতে জিজিয়া করের প্রবর্তন করেছিলেন। তার আমলে অনেক হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল। তিনি মারাঠা রাজ্যের শাসক সম্ভাজিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। তিনি নবম শিখ গুরু তেগ বাহাদুরকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, তার হিন্দু মন্দির ধ্বংসের বিষয়টি অতিরঞ্জিত। শুধু তাই নয় তিনি মন্দির নির্মাণে অর্থ অনুদান ও করেছিলেন। তার আমলে তার পূর্বসূরীদের তুলনায় প্রশাসনে মুঘল প্রশাসনের সর্বোচ্চ সংখ্যক হিন্দু কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি শিয়া মুসলিম এবং হিন্দুদের ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধচারণ করেন।

তার মৃত্যুতে পর ভারতের মধ্যযুগীয় যুগ শেষ হয় এবং ইউরোপীয় আক্রমণ শুরু হয় ভারতে। আওরঙ্গজেবকে প্রায়ই আমিরুল মুমিনিন (বিশ্বাসীদের নেতা) ডাকা হয় এবং উমর ইবনুল খাত্তাব ও সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুবের মতো বিশিষ্ট খলিফাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়।