ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইউপি সদস্যের চাঁদাবাজির অভিযোগ

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৬:৫০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:১০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজানের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঞ্জুমান আরা নামে এক নারীকে কৌশলে ফাঁসিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করেছে ওই নারী। এছাড়া মিজান এলাকায় বিভিন্ন সালিশসহ চাঁদাবাজি করে একাধিক লোকের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। 

আতঙ্কিত এলাকাবাসী মিজান বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস না পেলেও মুখ খুলেছে আঞ্জুমান আরা নামে ওই নারী।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকারী গোগা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজান বিভিন্ন সময়ে গোগা পূর্ব পাড়ার কালাম হোসেনের নিকট থেকে এক লাখ টাকা, রুহুল আমিনের নিকট থেকে এক লাখ টাকা, আঞ্জুমান আরা এর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা, হায়দার আলীর নিকট থেকে ২৫ হাজার টাকা, সেলিম রেজার নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা, আশরাফ আলীর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা, কবির হোসেনের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা, গোলাম হোসেনের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা, শফিকুল ইসলামের নিকট থেকে ৭৫ হাজার টাকা, নুরু সর্দারের নিকট থেকে ১৭ হাজার টাকা, অজিহার রহমান এর নিকট থেকে ৬৫ হাজার টাকা, ছালামত আলীর নিকট থেকে ৪ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে।

ভুক্তভোগী গোগা গ্রামের হায়দার আলী বলেন, আমার ছেলে কালিনি গ্রামের একটি মেয়ের সহপাঠী। ওই মেয়ে যশোর কলেজ থেকে ফিরে আসতে দেরী হওয়ায় সে আমার ছেলেকে বাগআঁচড়া থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফোন দেয়। আমার ছেলে আমার মোটরসাইকেল নিয়ে ওই মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসার সময় মিজান নামে একজন মোটরসাইকেল চালকের সহযোগিতায় মিজান মেম্বার আমার ছেলেকে মারধর করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এরপর অনেক দেনদরবার করে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে এ যাত্রায় রেহাই পাই। 

কালাম হোসেন বলেন, গোগা বাজারে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। একটি কোম্পানির পণ্য নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় মিজান মেম্বার আমার নিকট থেকে এক লাখ টাকা আদায় করে। অন্যান্যরা মিজান ও তার বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তাদের কথা ভাগ্যে যা ছিল তাই হয়েছে। টাকা গেছে এবার মুখ খুললে জানও যেতে পারে।

ভুক্তভোগী ওই নারী আরও জানান, আমি ৫নং ওয়ার্ডে বসবাস করতাম। কিন্তু মিজান আমাকে রমজান মাসে কুপ্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে আমাকে আমার এক আত্মীয় ভারত থেকে বেড়াতে আসলে তার নামে অপবাদ দিয়ে প্রচুর মারধর এবং তাকে গুম করার হুমকি দিয়ে আমার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে। এরপর সন্ত্রাসী মিজান ও তার বাহিনী মশিয়ার, ইমানুর, তাহাজ্জত-এর অত্যাচারে আমি বাড়ি বিক্রি করে ৪নং ওয়ার্ডে চলে যাই। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য  মিজানের নিকট জানতে চাইলে তিনি চাঁদাবাজির কথা অস্বীকার করে বলেন, গোগা পূর্বপাড়া গ্রামের আঞ্জুমান আরার সঙ্গে একজন ভারতীয় মেহমানের অবৈধ সম্পর্ক থাকায় তার নিকট থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অন্যান্য যাদের কথা বলা হচ্ছে তা এলাকার সালিশি বিচারে জমি দখলের টাকা আদায় করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, আঞ্জুমান আরা নামে ওই নারীর কথা তিনি শুনেছেন। তবে ঘটনাটি বেশ আগের। ওই নারী তেমন ভালো না। আর এলাকায় যে টাকা চাঁদাবাজির কথা বলা হচ্ছে এটা সত্য নয়। এটা সালিশি বিচারের টাকা আদায় হয়েছে মাত্র। 

উল্লেখ্য, ক্ষমতার দাপটে মিজান মেম্বারের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে সরকারি রাস্তার ইট উঠিয়ে বাড়ির কাজে ব্যবহার করার অভিযোগও রয়েছে এলাকাবাসীর। 

আই/এসি