ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ধসে পড়ার শঙ্কায় ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত কালুরঘাট সেতু (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:০৩ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০২:১৬ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে কালুরঘাট সেতু। সড়ক ও রেল যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ সেতুর নানা অংশ ভেঙে জীর্ণশীর্ণ হওয়ায় চলতে হয় কচ্ছপ গতিতে। এ কারণে ২০০১ সালে সেতুটিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝু্ঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপর নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ বাড়ছে তাদের। এ অবস্থায় নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে জানিয়ে আন্দোলন করেছেন এলাকাবাসী।

১৯ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝু্ঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও সেতুর ওপর দিয়ে চলছে যানবাহন। জোড়াতালি দেয়া ৯০ বছরের পুরনো সেতুটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে যান চলাচলের জন্য। চলাচল করছে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ভারী যানবাহন। চলছে যাত্রীবাহী ও ফার্নেস অয়েলবাহী ট্যাঙ্কার। এই সেতু মূলত দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাতায়াতে ট্রেন চলাচলের জন্য নির্মিত।

জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে কর্ণফুলী নদীর উপর লোহার পাটাতনে নির্মান করা হয় কালুরঘাট রেলওয়ে ব্রীজ। পরে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় যানবাহন চলাচলে। এখন ব্রীজের বিভিন্নস্থানে উঠে গেছে লোহার পাঠাতন। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। জীবনের ঝুঁকিই নিয়ে করতে হচ্ছে চলাচল করতে। জরাজীর্ণ হয়ে পড়া এই ব্রীজে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। তারা বলেন, প্রচুর সময় নষ্ট হয়। সড়ক ও রেলসেতু চান তারা।

এ অবস্থায়, কালুরঘাটে আরেকটি সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে স্থানীয়রা। এর অংশ হিসেবে শনিবার, ঝুকিপূর্ণ সেতুর পাশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বোয়ালখালী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

এদিকে বার বার একনেকে ওঠার পরও সেতুটি অনুমোদন না হওয়ায় ক্ষোভ জানান সেতু বাস্তবায়ন কমিটি।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৯৩০ সালে নির্মিত সেতুটিতে রেলের পাশাপাশি যানবাহন চলাচল করছে ১৯৫৮ সাল থেকে। এই একটি সেতু দিয়ে যান চলাচল, পায়ে হেঁটে পারাপার এবং রেল চলাচল করে থাকে। একমুখী চলাচলের কারণে দুই পাশে যানজট হওয়ার পাশাপাশি সেতুর উপর চাপ থাকে সব সময়। যার জন্য বারবার মেরামত করে সেতুটি সচল রাখার ব্যবস্থা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে সেতুটি মেরামত করা হয়। এর আগে ২০০৪ সালেও এটি মেরামত করা হয়েছিল। এ ছাড়াও প্রতিনিয়ত ছোটখাটো মেরামত কাজ করা হচ্ছে এই সেতুর।

উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ফ্রন্টের সেনা পরিচালনার জন্য কর্ণফুলী নদীতে একটি আপদকালীন সেতু তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৩০ সালে ব্রুনিক অ্যান্ড কোমপানির ব্রিজ বিল্ডার্স হাওড়া নামে একটি সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কালুরঘাটে যুদ্ধকালীন ব্যবহারের জন্য একটি সেতু তৈরি করে। জরুরি ভিত্তিতে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে সেতুটি ১৯৩০ সালের ৪ঠা জুন উদ্বোধন করা হয়।

পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধ মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়। ১৯৫৮ সালে এই একমুখী যুদ্ধসেতুটিই সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সেতুতে দুটি অ্যাবটমেন্ট, ছয়টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিল পিলার ও ১৯টি সপ্যান রয়েছে।

টিআই/