ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মিন্নির নতুন ভিডিও আদালতে জমা দেয়নি পুলিশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড ঘটনার নতুন ভিডিও প্রকাশের পর ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে মামলাটিতে। ফলে বদলে যেতে পারে এর চার্জশীট এমন ধারণা করেছিলো অনেকেই। তবে আজ বুধবার এই হত্যা মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিলেও  মিন্নি রক্তাক্ত স্বামীকে  রিকশায় করে বরগুনার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি আলামত হিসেবে আদালতে জমা দেয়নি পুলিশ।

আয়শার বাবা মোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ করেছেন, ‘আমরা কোনোভাবেই এ অভিযোগপত্র মানি না। এটা পুলিশের মনগড়া, বানোয়াট ও ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগপত্র। একটি প্রভাবশালী মহল থেকে আয়শাকে এই মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পুলিশকে প্রভাবিত করা হয়েছে। আমরা এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব’

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সামনের একটি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফের উপর হামলার পর ওই দিন সকাল ১০টা ২১ মিনিটের সময় মিন্নি একাই একটি রিক্সায় করে গুরুতর যখম হওয়া অচেতন রিফাতকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে নিয়ে আসেন।

এসময় সেখানে দাড়ানো মামুন নামের একজন রিফাত শরীফকে বহন করা রিক্সার দিকে দৌঁড়ে আসেন। রিফাতের অবস্থা দেখেই তিনি দৌঁড়ে হাসপাতালের ভিতরে গিয়ে একটি স্ট্রেচার নিয়ে ফের রিক্সার পাশে আসেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অনেকেই। এরপর রিক্সা থেকে নামিয়ে অচেতন রিফাত শরীফকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, রক্ত মাখা হাতে মিন্নি হাসপাতালের সামনে উপস্থিত একজনের ফোন নিয়ে কল দিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করেন। এর কিছু সময় পরে মিন্নির বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন কিশোর হাসপাতালে আসেন।

এরপর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালের সামনে এনে রিফাত শরীফকে বহন করে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়।

ফলে নতুন এই ভিডিও প্রকাশের পর আবারও আলোচনায় আসেন মিন্নি। তবে এবার সবার ধারণা পরিস্কার হয়ে গেছে। রিফাতের বাবার (মিন্নির শশুর) অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। তার অভিযোগ ছিল- হত্যাকাণ্ডের পর মিন্নি তার রক্তাক্ত স্বামী রিফাতকে ফেলে চলে যান, হাসপাতালে নিয়ে যাননি। কিন্তু ভিডিওতে দেখা গেছে মিন্নিই রিফাতকে নিয়ে আসেন রিক্সায় করে।

এদিকে নতুন ভিডিও প্রকাশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না জানান, এখনও এ মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আদলতে গৃহীত হয়নি। ফলে নতুন দিকে মোড় নিতে পারে বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলা।

তিনি আরও বলেন, ‘মূলত মিন্নিকে আসামি করা হয়েছে সন্দেহের বশে। এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল। সেটা হচ্ছে অন্য আসামীদের রক্ষা করা। রিফাতের বাবা আবদুল হালিম এত দিন এ হত্যার সঙ্গে মিন্নিকে জড়িয়েছিলেন। এখন নতুন ভিডিও প্রকাশের পর তার সেই দাবি ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। ফলে মামলাটি নতুন মোড় নিতে পারে।’

পান্না আরও বলেন, ‘যেহেতু পুলিশ দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত একটি ভিডিও ও কথোপকথন ধরে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি করার ব্যাপারে এগিয়েছে। তাই তারাও এখন নতুন ভিডিওটি নিয়ে সামনে এগোবেন।’

 টিআর/