লালমনিরহাটের বীরাঙ্গনা
প্রকাশিত : ০৯:৪০ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সোমবার | আপডেট: ০৯:৪০ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সোমবার
লালমনিরহাটের বারাইটারী গ্রামের বীরাঙ্গনা জ্ঞানোবালা বর্মনী। পাকিস্তানী হানাদাররা একাত্তরে হত্যা করেছে তার স্বামীকে, গেছে সম্ভ্রমও। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও তার খোঁজ নেয়নি কেউ। জীবন সায়াহ্নে প্রাণ বাঁচাতে এই বৃদ্ধাকে কাজ করতে হচ্ছে অন্যের বাড়িতে।
চোখের সামনে স্বামীকে গুলি করে হত্যা আর ক্যাম্পের মধ্যে আটকে রেখে সম্ভ্রম লুন্ঠনের সেই বিভিষিকাময় স্মৃতি মনে হলে, আজো অঝোরে কাঁদেন তিস্তাপাড়ের বীরাঙ্গনা জ্ঞানোবালা বর্মনী।
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানান, দেশ স্বাধীন হলেও সমাজ তাকে বিতাড়িত করে। আশ্রয় মেলেনি কোন আত্মীয়-স্বজনের কাছে। বাঁচার তাগিদে, অন্য গ্রামে গিয়ে শুরু করেন কাজ।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, জ্ঞানোবালা বর্মনীর স্বামী শশি মোহন বর্মন বারাইটারী, তিস্তা, গোকুন্ডা এলাকার তরুনদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনে উৎসাহিত করতেন। তাদেরকে ভারতে পাঠাতেন মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং ক্যাম্পে। দেশের জন্য স্বামী আর সম্ভ্রম হারিয়ে কি পেলেন জ্ঞানোবালা- সেই প্রশ্ন মুক্তিযোদ্ধাদের।
বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার কথা বলা হলেও, জ্ঞানোবালা তা পাননি। খাওয়া-পরার নিশ্চয়তা না থাকায়, ৭০ বছর বয়সেও জ্ঞানোবালাকে করতে হচ্ছে গৃহপরিচারিকার কাজ।
দেশের জন্য যিনি হারিয়েছেন স্বামী-সম্ভ্রম; দেশ কি নেবে না তার দায়িত্ব? জ্ঞানোবালার কণ্ঠে এই প্রশ্ন যেন সবার।