ঢাকা, সোমবার   ০৬ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

স্নাতক ডিগ্রি চাইলে হতে হবে চাষী!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০৬ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

স্নাতকের কোর্স হলো তিন বছরের। আর তার মধ্যে দু’বছরই মাঠে চাষবাস করতে হয় ছাত্রদের! নচেৎ স্নাতক ডিগ্রি পাওয়া যাবে না। এমনটাই শোনা যায় চীনের এক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে। বিগত ১০ বছর ধরে এখানে এই নিয়মই চলে আসছে।

এই নিয়ম চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির। ২০০৯ সাল থেকে এই নিয়ম চালু করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। নিয়মটি ভীষণ ফলপ্রসূও বটে। এর কারণে চীনের শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বহু গুণ।

পুরো চীনে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি স্নাতকস্তরের ছাত্রদের হাতেনাতে কৃষিকাজ শেখানোর জন্যই এই নিয়ম চালু করে। তিন বছরের স্নাতক কোর্সের দু’বছরই ছাত্রদের চাষিদের সঙ্গে মিলেমিশে মাঠে কাজ করতে হয়।

২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম এই প্রজেক্ট চালু করে হেবেই প্রদেশের বাইঝাইয়ে। তখন থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই প্রজেক্টে হেক্টর প্রতি গম উৎপাদন ৫,৬৭০ কিলোগ্রাম থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭,২৭০ কিলোগ্রাম। আর ভুট্টা উৎপাদন ৬,৪৩৫ কিলোগ্রাম থেকে বেড়ে হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৯,১০৫ কিলোগ্রাম।

ছাত্রদের শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ে আটকে না রেখে, বরং হাতেনাতে প্রশিক্ষিত করার জন্যই এই পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সাফল্যে চাষিরাও অবাক হয়েছে। প্রথম যখন চাষিদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শুরু করেন ছাত্ররা, তখন এই বিষয়টিকে চাষিরা ভালচোখে দেখেনি। তাদের মনে হয়েছিল, এর ফলে তাদের কাজের ক্ষতি হবে। চাষের ক্ষতি হবে। কিন্তু ফলাফল হয়েছে উল্টা।

ছাত্ররা নিজেদের পড়াশোনা কাজে লাগিয়ে প্রথমে জমি পরীক্ষা করে নেন। মাটির প্রকৃতি অনুযায়ী কোন ধরনের বীজ বপন করা উচিত তা চাষিদের জানান। সেই অনুযায়ী কোন জমিতে কী শস্য চাষ হবে তার একটা তালিকাও বানান ছাত্ররা।

এর আগে চাষিরা নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চাষাবাদ করতেন। কিন্তু কোন সময়ে কোন বীজ কোন জমিতে বপন করা উচিত তা জানতেন না। এভাবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রদের পাশাপাশি চাষিরাও অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছে। যার ফলে এর প্রভাব পড়েছে শস্য উৎপাদনে। ফলন বেড়ে গেছে বহু গুণ।

এএইচ/