ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দেশজুড়ে ক্যাসিনো ঝড়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:০৩ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

হঠাৎ যেন বদলে গেল সবকিছু। গত দু’দিন দেশজুড়ে আলোচনায় শুধুই ক্যাসিনোর খবর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দখল করে নিয়েছে আলোচিত ক্যাসিনো সংবাদ। দেশি গণমাধ্যমেও বেশিরভাগ জুড়ে ক্যাসিনো সংবাদ স্থান করে নিয়েছে। ক্যাসিনো উচ্ছেদে হঠাৎ র‌্যাব প্রশাসনের এ উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে  চারদিকে। প্রধানমন্ত্রীর এ সাহসীক উদ্যোগ দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এ আলোচনায় আরও ঘি ঢেলেছে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক এর বক্তব্য।

ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন লিখেছেন, যুবলীগের বিভিন্ন সদস্যরা যে ক্যাসিনো খুলেছেন, আইন-কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টাকা কামাচ্ছেন, বুধবারের আগ পর্যন্ত আপনি তা জানতেন না বলে কী বুঝাতে চাইলেন জনাব ওমর ফারুক চৌধুরী? যুবলীগের কাজ সম্পর্কে আপনি কী জানেন? কী করে যুবলীগ? কেন করে?

আপনি যে ক্লাবের সভাপতি সেখানে জুয়া খেলা হয় তা আপনি জানতেন না বলে কী বুঝাতে চাইলেন জনাব রাশেদ খান মেনন? ক্লাবটিতে আপনি একবারের বেশি যান নাই মানে কী? তাহলে আপনি সেই ক্লাবের সভাপতি কেন হয়েছিলেন, কেন থেকে গেলেন?    

জ্বেষ্ঠ্য সাংবাদিক মোস্তাফা ফিরোজ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, খুবই অবাক ও হতাশ হলাম যুবলীগ চেয়ারম্যানের কথা শুনে। তিনি কি এই অভিযানের প্রেক্ষাপটটি জানেন না? কার নির্দেশে হচ্ছে এটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? চাঁদাবাজি, কমিশনের টাকা ভাগাভাগি এবং নানা রকমের কাজের সাথে সম্পৃক্ততার জন্য এর আগে ছাত্রলীগে সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীকে পর্যন্ত দলীয় পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় যে এটি হয়েছে সেটাও সবার জানা। এটা স্পষ্ট যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর অনাচার পাপাচার বরদাস্ত করতে চাচ্ছেন না। 

প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর লিখেছেন, রাশেদ খান মেনন একটি ক্লাবের চেয়ারম্যান। বাকীগুলোর চেয়ারম্যান কারা। তাদের নাম  শুনি না কেন?

সাংবাদিক নেতা কুদ্দুস আফ্রাদ লিখেছেন, অবাক হয়েছি তার হুঙ্কার শুনে। অপরাধিদের পক্ষে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সাফাই। সম্ভবত, ঘরে ভিতর থেকেই এ অভিযানের জোরালো বিরোধিতা চলছে।

সাংবাদিক সুনীতি কুমার বিশ্বাস লিখেছেন, অনেকের ভন্ডামি দেখে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। ঢাকায় ক্যাসিনো খেলা হয় তারা জানেই না। এমনকি ক্যাসিনোর নাম তারা কখনো শুনেনি….?

সাংবাদিক আনোয়ার হক লিখেছেন, সব ক্যাসিনোতে অভিযান চলছে কী? একযোগে ক্রাশ প্রোগ্রাম না হলে চোখের পলকে ওগুলো মসজিদ বানিয়ে ফেলবে ওরা।

যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন-উল হাকিম লিখেছেন, আমাদের মহানগর জীবনে কখন যে ক্যাসিনো ঢুকে পড়েছে, আমরা বলতেও পারি না। অপরাধী আর হঠাৎ গজিয়ে উঠা ধনী গোষ্ঠীর মনোরঞ্জন চলছে। এখানে লেনদেন হচ্ছে শত-হাজার কোটি টাকা। শীর্ষ নেতৃত্ব চাপ না দিলে এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। লুটপাট করে যারা টাকার পাহাড় বানিয়ে পাচার করছে, প্রধানমন্ত্রী কী তাদের নাম ধরে জনে জনে ব্যবস্থা নিতে বলবেন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান লিখেছেন, ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভালোবাসা ও দোয়া রইলো আপনার এই পদক্ষেপের জন্য! আপনার পাশে আছে বাংলার সাধারণ জনগণ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স নীতি আপনি ঘোষণা করেছেন, তার শুরু দেখছি, নিশ্চয়ই শেষটাও দেখবো ইনশাল্লাহ। এখনো স্বপ্ন দেখুক কোটি মানুষ উঠে দাঁড়াবার, আরো একবার! 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি’তেও  ‘ক্যাসিনোয় অভিযান: র‌্যাব-পুলিশের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার পর ফের সুর নরম করলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুর ‘ শীরোনামে প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ঢাকায় অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানো বা জুয়ার বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান নিয়ে এখন দ্বিমুখী বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে, এতদিন অবৈধভাবে চলা ক্যাসিনো বা জুয়ার বিরুদ্ধে কেন অভিযান চালানো হয়নি?

এছাড়া দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  রাজধানীর চারটি ক্যাসিনোতে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে একযোগে অভিযান চালায় র্যাবের মোট পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট। বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্যাসিনোতে অভিযান এবারই প্রথম। অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনোর মালিকানা, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র বহন করার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করা হয়েছে।

আরকে/