ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সান্ধ্যকালীন কোর্স

ইবিতে ১০ হাজার টাকায় একদিনে তিন পরীক্ষা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৩৯ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:৪৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্স সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে একদিনে তিন কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার আইন বিভাগের পরিত্যক্ত রুমের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে কোনো কক্ষ পরিদর্শক ছাড়াই এক শিক্ষার্থী মোবাইলে নকল করে এক দিনে টানা ৯ ঘন্টায় তিনটি কোর্সে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার এসএম আব্দুল লতিফ জানান,আইন বিভাগের এ্যাসিটেন্ট প্রফেসর ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটু ৯ম ব্যাচের ৩য় সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীর গত বুধবার একসঙ্গে ৯ ঘন্টায় ৩টি কোর্সের পরীক্ষা আবদ্ধ একটি কক্ষে নেন।
 
গোপন তথ্যর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হোন।ওই আবদ্ধ কক্ষে সিটকিনি বন্ধরত অবস্থা থেকে ওই শিক্ষার্থীসহ একসঙ্গে তিনটি পরীক্ষার খাতা, স্মার্ট ফোন ও নকল জব্দ করেন।আবদ্ধ কক্ষে কোনো পরিদর্শকের উপস্থিতি ছিল না।পরে ওই শিক্ষার্থী ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা সুযোগ পেয়েছে বলেও জানা গেছে। 

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি ছাত্র উপদেষ্টা কর্তৃক বৃহস্পতিবার পৃথক পৃথক দুই লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।প্রতিবেদনে উক্ত কোর্স সমূহের প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট কোন কোর্স শিক্ষক কর্তৃক প্রণীত নয় বলে উল্লেখ্য আছে। 

তিনি আরও বলেন, এ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটুর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দায়িত্বহীনতা ও বিধি বর্হিভুতভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করা প্রমাণিত হয়েছে যা পরীক্ষা শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।বিধায় তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনটি অভিযোগ আনোয়ন করেন।একই দিনে ১০৫, ১০৬, ১০৭ তিনটি কোর্সের ৯ ঘন্টার তিন দিনের পরীক্ষা পরিদর্শক ব্যতিরেকে স্টোর রুমের ভিতর থেকে বন্ধ করে অবারিতভাবে নকল করার সুযোগ প্রদান করেছেন।৩টি কোর্সের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষক কর্তৃক না করা।যথাযথ প্রক্রিয়ায় মনোনীত পরিদর্শক কর্তৃক পরীক্ষা গ্রহণ না করা।উপর্যুক্ত আনীত অভিযোগের সঙ্গে ওই শিক্ষকের সম্পৃক্ততা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সান্ধ্যকালীন কোর্সের ব্যাপারে সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছে।আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বর্ণিত অপরাধের কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলে নোটিশ দাখিল করা হয়েছে।

এ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটু বলেন,‘ ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সময় আমি ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলাম না।বিষয়টি আমি জানি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে আজাদ লাভলু বলেন,‘সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ হওয়ার পর আবার নতুন করে যে অর্ডিন্যান্স হয়েছে তাতে কি ধরনের শাস্তি উল্লেখ আছে তা আমার জানা নেই।এই পরীক্ষা খাতাপত্র কিভাবে মূল্যায়িত হয় সেটি আমাদের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে কোন সময় জানানো হয় না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড.পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ ‘ওই শিক্ষার্থীর ব্যাপারে আমি বিষয়টি লিখিতভাবে প্রশাসনের কাছে বিবৃতি দিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ইবি প্রশাসনের ঘোষিত লক্ষ্য।আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি।’
কেআই/