ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সাকিবের কাছেই হারল আফগানরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৪ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ১০:৪১ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার

আফগানিস্তানকে ১৩৭ রানে থামিয়ে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাকিব-মুশফিকের জুটিতে বিপদ সামলে উঠলেও ফের দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে ফিফটি হাঁকানো দলপতি সাকিবের অনবদ্য ব্যাটেই কাঙ্ক্ষিত জয় পায় দল। 

এদিন টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৭ উইকেটে ১৩৭ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানিস্তান। জবাবে সাকিবের উনিশতম ফিফটিটে চড়ে ৬ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। 

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই মুজিবের বলে অধৈর্য হয়ে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। ১০ বল খেলে সাজঘরে ফেরেন মাত্র ৪ রানেই। পরের ওভারেই তার পথে হাঁটেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন। নাভিদের বলে রশিদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে এই বাঁহাতি ফেরেন ৫ রানেই। ফলে ১২ রানেই দ্বিতীয় উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ।   

পরে মুশফিক ২৫ বলে এক ছয়ে ২৬ করে, আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক মাহমুদউল্লাহ ৬ রানে এবং এ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া সাব্বির মাত্র ১ রানে সাজঘরে ফেরেন। 

তবে অবিচল থাকা দলনায়ক সাকিব একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন। খেলেন অনবদ্য ৭১ রানের ইনিংস। তার ৪৫ বলের এ ইনিংসে ছিল আটটি চার ও একটি ছয়ের মার। যে ইনিংসটি খেলে যেমন দলের জয় নিশ্চিত করেন, তেমনি হন ম্যাচ সেরাও।

যদিও জয়সূচক রানটা আসে মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে। ১২ বলে এক চারে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই ডানহাতি মারকুটে। 

ইনিংসে আফগানদের হয়ে রশিদ খান ও নাভিদ উল হক নেন ২টি করে উইকেট। আর বাকি উইকেট দুটি যায় মুজিব উর রহমান ও করিম জানাতের ঝুলিতে।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে মাহমুদউল্লাহর হাত ফসকে জীবন ফিরে পেয়ে রীতিমত তাণ্ডব চালান হযরতুল্লাহ জাজাই। কিছুতেই দমানো যাচ্ছিল না তাকে। তবে দশম ওভারে হাত ঘুরাতে এসেই জাজাইসহ দুই উইকেট তুলে নেন আফিফ হোসেন। অন্য বোলাররাও তার দেখানো পথে হাঁটলে ৭ উইকেটে ১৩৭ রানে থামতে বাধ্য হয় আফগানিস্তান।

এদিন টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নেমে দারুণভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। সাইফুদ্দিন, শফিউল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান প্রথম পাঁচ ওভারে দিলেন মাত্র ২৬ রান। এরপরই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন জীবন পাওয়া হযরতুল্লাহ জাজাই। ২ চার ১ ছয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের করা ষষ্ঠ ওভার থেকে তুলে নেন ১৬ রান। তবে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জাজাইকে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে দেননি তরুণ আফিফ।

সিরিজে নিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন। তবে বোলিংয়ে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। আজ প্রথমবারের মতো আফিফের হাতে বল তুলে দেন সাকিব আল হাসান। তাতেই বাজিমাত! নিজের প্রথম ওভারে কোন রান না দিয়েই ভয়ঙ্কর জাজাই (৩৫ বলে ৪৭) ও আসগর আফগানকে (০) ফিরিয়েছেন আফিফ। 

এর পর মোস্তাফিজ, সাকিব, সাইফুদ্দিন ও শফিউলদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একে একে সাজঘরে ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ২৯ রানে, মোহাম্মদ নবী ৪ রানে, গুলবাদিন নাইব ১ রানে, নজিবুল্লাহ জাদরান ১৪ রানে এবং করিম জানাত ৩ রানে। 

শেষ পর্যন্ত শফিকুল্লাহ ২৩ রানে এবং রশিদ খান ১১ রান করলে বাংলাদেশের সামনে ১৩৮ রানের লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। বাংলাদেশের পক্ষে আফিফ ৯ রানে ২টি উইকেট নেন। এছাড়া শফিউল, সাইফুদ্দিন, মোস্তাফিজ ও সাকিব ১টি করে উইকেট লাভ করেন। 

এর আগে দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। যে কারণে দেখেশুনে খেলা শুরু করলেও দ্বিতীয় ওভারে স্কয়ার লেগের উপরে ক্যাচ তুলে দেন হযরতুল্লাহ জাজাই। কিন্তু সে ক্যাচ রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ।   

চলমান ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে আগেই। যে কারণে আজ (শনিবার) আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা হয়ে পড়ে অনেকটাই নিয়মরক্ষার। যে ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু আসলেই কী শুধু ‘নিয়মরক্ষার’ ম্যাচ মনে করেছে বাংলাদেশ? অবশ্যই না। জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে এদিন মাঠে নামে টাইগাররা। তুলে নেয় কাঙ্ক্ষিত জয়। যে জয়ের অভ্যাস নিয়ে ফাইনালে আরেকবার আফগানদের হারাতে চায় বাংলাদেশ। 
 
কেনোনা, দলটির বিপক্ষে সেই ২০১৪ সালে প্রথম জয় পেয়েছিল। তারপর থেকে আজকের আগ পর্যন্ত আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টিতে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। কদিন আগে টেস্টেও নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে আফগানদের কাছে। তাই এদিন ছিল ‘আফগান জুজু’ কাটানোর একটা সুবর্ণ চান্স। যে চান্স পেয়ে পুরোপুরি না হলেও বেশ সফল সাকিব আল হাসানের দল। 

এনএস/