ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২১ ১৪৩১

আফগান-বধের ‘মন্ত্র’ দিলেন আফতাব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১৬ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ হতে মাত্র এক ম্যাচ বাকি। মঙ্গলবার শিরোপার লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। বড় এ ম্যাচটির আগে টাইগারদেরকে আফগান-বধের মন্ত্র দিলেন সাবেক ক্রিকেটার আফতাব আহমেদ। 

আগামীকাল (২৪ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে মুখোমুখি হবে সাকিব-রশিদের দল। আফগানদের বিপক্ষে টেস্টের পর টি-টোয়েন্টিতেও হার দেখেছে টাইগাররা। যদিও শেষ ম্যাচটিতে বহু কাঙ্ক্ষিত জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। তাই ফাইনাল জিতে শিরোপা নিজ দেশে রেখে দেয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ। 

কিন্তু, কীভাবে ফাইনালে আটকানো যেতে পারে আফগানিস্তাকে? বিষয়টি নিয়েই বাংলাদেশ শিবিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। কেউ বলছে- পেস আক্রমণ সাজিয়ে তাদের ঘায়েল করা সম্ভব। আবার কারও দাবি, স্পিনের মতো পেসও ভালো খেলে আফগানরা। 

তবে দ্বিতীয়বারের মত কোন ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে জিততে টাইগারদের দারুণ এক পরামর্শ দিয়েছেন আফতাব আহমেদ। জাতীয় দলের এক সময়ের এ মারকুটে ব্যাটসম্যান বর্তমানে জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) চট্টগ্রাম বিভাগের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। একটি ক্রিকেট একাডেমিও রয়েছে তার। 

আফতাব জানিয়েছেন, আফগানিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জেতার মতো ক্ষমতা আমাদের আছে। কিন্তু একটু কৌশলী হতে হবে। দ্রুত উইকেট দিয়ে নিজেদের ওপর চাপ তৈরি করা যাবে না। বিশেষ করে, রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের বলে জোর করে তুলে মারা যাবে না। এরা ছাড়া অন্য যে বোলাররা আছেন, তাদের টার্গেট করতে হবে। 

তার কথায়, রশিদ ও মুজিবকে আটকাতে হবে। হ্যাঁ, রান হয়তো তাদের ওভার থেকে বেশি আসবে না। কিন্তু বাকি ওভার পরিকল্পনা মাফিক কাজে লাগাতে হবে।

দুই দলের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে আফতাব আহমেদ বলেন, ক্রিকেট অঙ্গনে আফগানিস্তান একেবারেই নবীন দল হলেও টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি দারুণ খেলছে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে ওরা বাংলাদেশের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে তিন ধাপ এগিয়ে। আমি দুই দলের মধ্যে আসলে তিনটি বড় পার্থক্য দেখছি। যেখানে ব্যবধানটা তৈরি হচ্ছে। 

এক নম্বর হলো- ওদের কোয়ালিটি স্পিন। আমরা ওদের স্পিনে খেলতেই পারছি না। তাই যতটা সম্ভব ওদের স্পিনকে রিড করতে হবে। 

দুই নম্বর পার্থক্য হলো- পেশি শক্তি। ওদের ছয় বা চার মারার যে ক্ষমতা তা আমাদের এখনও নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমাদের চার ব্যাটসম্যান ফুল টস বলে মারতে গিয়ে আউট হয়েছে। অথচ তাদের হাতে যদি সেই জোর থাকতো তাহলে সেগুলো ক্যাচ না হয়ে ছক্কা কিংবা চার হতো। এ ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি কৌশল অবলম্বন করে খেলতে হবে। যেন ছয় কম হলেও চারের মার বেশি হয়।’ 

তিন নম্বর হলো- আফগানিস্তান দারুণ আত্মবিশ্বাসী। ওরা টেস্টটা দেখেন কতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছে। আমরা কিন্তু অনেক অভিজ্ঞ হয়েও সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারছি না। তাই আত্মবিশ্বাস থাকাটা খুব প্রয়োজন।

প্রাক্তন এই ব্যাটসম্যান আরও বলেন, আমি যা দেখেছি আফগানিস্তান শুধু স্পিনই নয় পেসও দারুণ খেলে। আবার ওদের পেসাররাও দারুণ বৈচিত্র্য নিয়ে বল করে। তাই পেস সহায়ক উইকেট বানালেই জিতবো, তা নয়। আমাদের পেসারদের সবচেয়ে বড় অভাব হলো ভেরিয়েশন। যেমন ইয়র্কার, বাউন্সার, শর্ট বল করা। বাংলাদেশে অনেক নামিদামি পেস বোলিং কোচ এসেছে। কিন্তু আমি জানি না এই ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ হয়েছে কি না। আমাদের উচিত বছরের বড় একটা সময় মিরপুরের বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক মাঠের সেন্টার উইকেটে লম্বা সময় ধরে এই ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ করা।

সব ফরম্যাটে ব্যবহার করা নিয়ে আফতাব বলেন, মুজিব উর রহমানের মতো স্পিনারকে আফগানিস্তান টেস্টে খেলাচ্ছে না। ওকে টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে ওর এই ফরমেটে যে কাজ সেটি করতে পারছে। ওর মতো দারুণ কোনও বোলার পেলে আমরা কী করতাম? সব ফরম্যাটেই খেলাতাম। এতে করে কি হয়, কোনও ফরমেটে খারাপ করলে অন্যটাতে চাপ নিয়ে খেলে। এই জন্য ভালো করতে পারে না।

টি-টোয়েন্টিতে সঠিক পরিকল্পনার অভাব আছে উল্লেখ করে বর্তমান এই কোচ বলেন, এটা সত্যি দুঃখজনক যে, সেই ২০০৭ থেকে আমরা টি-টোয়েন্টিতে খেললেও এখনও অনেক পিছিয়ে। আমি এই জন্য বলবো হয়তো কোথাও সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। এই ফরমেটে উন্নতি করতে হলে বড় পরিকল্পনা দরকার। যে দুর্বলতাগুলো আছে তা গোড়া থেকেই দূর করতে হবে। 

টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটের জন্য স্পেশালিস্ট বোলার ও ব্যাটসম্যানদের আলাদা করেই তৈরি করতে হবে বলেই অভিমত সাবেক এই টাইগারের।

এনএস/