ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মিউজিক ভিডিওকে টাটা জানাচ্ছেন আসিফ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:২৭ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

আসিফ আকবর। বাংলা গানের যুবরাজ তিনি। সেই ২০০০ সাল থেকে অবিরাম পথ চলছেন পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই এই তারকা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙছেন, গড়ছেন। গান লেখা, সুর করা কিংবা সঙ্গীত পরিচালনা- এসবের ধার ধারেননা তিনি। তবে চলছেন তারুণ্যের গতিতে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। মিউজিক ভিডিও নামক গানের নব ধারাকে বেছে নিয়েছেন যুবরাজ। একের পর এক প্রকাশ করছেন নিজের গানের চমৎকার সব ভিডিও। নিজেই সেই ভিডিওতে মডেল হিসেবে অভিনয় করছেন। কিন্তু চমক নেই কোনো ভিডিওতে।

২০০০ সালের সেই আসিফ শ্রোতের কাছে নতুন নতুন গান নিয়ে আসলেও তাতে প্রাণ নেই। তবে এটা ঠিক যে গানের মানুষ হলেও অভিনয়ে বেশ দক্ষতা দেখাচ্ছেন আসিফ।

কখনও সফল প্রেমিক, কখন ব্যর্থ প্রেমিক, আবারও কখনও দেবদাস। কখনও ডাকাত, কখনও পুলিশ, আবারও কখনও অন্ধকার জগতের ডন। সব চরিত্রেই আসিফ নিজেকে মেলে ধরছেন। তাইতো বাংলা সঙ্গীতে স্বকণ্ঠে পরিচিতি সর্বশেষ শিল্পী হিসেবে আসিফ আকবরের নামই বারবার উচ্চারিত হয়।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন, শ্রোতা-দর্শকদের কাছে দৃষ্টিনান্দনিকতার পরীক্ষা তিনি আর দেবেন না। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে এ বছরে শেষ নাগাদ হাতে থাকা কাজগুলো শেষ হলেই মিউজিক ভিডিওকে টাটা জানাবেন।

আসিফ লিখেছেন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কয়দিন পরপর ভূতের আক্রমণ হয়। গত উনিশ বছর ধরে তাই দেখে যাচ্ছি, কয়দিন খুব রমরমা, তারপর আবারও সেই গলা শুকানো আর্তনাদ- ব্যবসা নেই। এর মূল কারণ হচ্ছে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাব, হুজুগ থেকে বের হতে পারেনি ইন্ডাস্ট্রি। আমি সব সময় চাইতাম ভিডিও যেন গানকে ছাপিয়ে না যায়, গান সব সময়ের আবেদন নিয়ে থাকবে। বছর চারেক আগে ট্রেন্ড শুরু হল মিউজিক ভিডিওর। আমিও পড়ে গেলাম এ চক্করে। ভিউয়ের বাজারে আজনবি হয়ে ঘুরলাম আড়াই বছর। দিনরাত একাকার করে খাটলাম, এখন শুনি ব্যবসা নেই। এদিকে ক্লান্তিহীন আমার জীবনের রুটিন গেল বদলে। ঘুম, শুটিং, রেকর্ডিং, স্টেজ শো- সব মিলিয়ে লাইফের ওপর ব্যাপক টর্চার বয়ে গেল। আমি পুরো ক্যারিয়ারে স্টেজ শো কম করেছি যেন গলার স্বর এবং সুর ধরে রেখে দীর্ঘদিন রেকর্ডিং করতে পারি। গায়ক মরে যাবে, গান থেকে যাবে ইতিহাস হয়ে। এ ভিউ রোগটা এসে আমাদের গানের বাজেট আকাশচুম্বী করে দিল। কান আছে নাকি নেই, চেক না করেই সবাই দে ছুট চিলের পিছে! এখন শুনি আবারও প্রযোজকদের গলা শুকিয়ে গেছে- ব্যবসা নেই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই ভূতের ভয় থেকে বাঁচার জন্য আমি নভেম্বর থেকে অতীব প্রয়োজন না হলে মিউজিক ভিডিও করব না। কিছু গানের ভিডিওর কাজ বাকি, সুস্থ হলেই এগুলো শেষ করে টাটা জানিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাথায় অবশ্যই বিকল্প প্লান রয়েছে বরাবরের মতো। প্রচুর টিভি শো করব, তবে দুই-তিন ঘণ্টাব্যাপী নয়। এ ক্ষেত্রে টেলিভিশন এবং রেডিওওয়ালাদের নিজেদের নিয়ে ভাবতে হবে। মানুষের সময়ের দাম আছে, সেটা মাথায় না রেখে হিসাবে রাখতে হবে। একটা পূর্ণাঙ্গ মিউজিক চ্যানেল যে দেশে নেই, সেই দেশে হাওয়া বদলের চিন্তা স্রেফ ধান্দা! এগুলোর মধ্যে আমি নেই, বদলাতে থাকা হাওয়াকে কব্জা করে এগিয়ে যাওয়া যোদ্ধা আমি। চামচামি করে নয়, যুদ্ধজয়ী বীরের মতো এগিয়ে যাব সংকোচহীন চিত্তে ইনশাআল্লাহ্।’

এসএ/