ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সম্রাটকে হত্যা করতে চেয়েছিল জিসান!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১৯ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার

ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ে বিতর্কিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট হত্যা করতে চেয়েছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এমন তথ্য জানিয়েছেন আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা খালেদ মিলে সম্রাটকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। দুবাইয়ের একটি বৈঠকে তারা যুবলীগ নেতা সম্রাটকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ইতিমধ্যে বহুল আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে রোববার ভোর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী গ্রাম কুঞ্জশ্রীপুরের মনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব)।

জানা গেছে, এ শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা খালেদ মিলে সম্রাটকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। দুবাইয়ের একটি বৈঠকে তারা যুবলীগ নেতা সম্রাটকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ক্যাসিনোসহ ঠিকাদারি ব্যবসায় সম্রাটের বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির একটা বিরাট অংশের প্রতি টার্গেট ছিল বিদেশে আত্মগোপন করা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের। এদের মধ্যে দুবাইয়ে আত্মগোপন করা জিসান,রনি এবং ভারতে আত্মগোপন করা শাহাদত, আশিকের নাম ছিল তালিকার শীর্ষে।

রাজধানীর বাড্ডা, মতিঝিল, মালিবাগ, শাহজাহানপুর, মগবাজার ও খিলগাঁও এলাকার চাঁদাবাজির একটি বড়ো অংশ জিসানের কাছে পৌঁছে যেত। ধীরে ধীরে জিসান হাত বাড়ান সম্রাটের চাঁদাবাজির সাম্রাজ্যের দিকে। মাসে ১০ লাখ টাকার পরিবর্তে চাঁদার অঙ্ক পৌঁছে যায় ১০ কোটি টাকায়। এ নিয়ে জিসানের সঙ্গে সম্রাটের বহুবার কথোপকথন হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে সিঙ্গাপুরে ম্যারিনা বে স্যান্ডস হোটেলে জিসানের সঙ্গে সম্রাট ও খালেদের বৈঠক হয়। সেখানে সম্রাটের কাছে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন জিসান।

সম্রাট জানান, তিনি এখন রাজধানীর ডন। তিনি কাউকে চাঁদা দিতে পারবেন না। এমনকি মাসের ১০ লাখ টাকা চাঁদা পাঠানোও বন্ধ করে দেন সম্রাট। এ নিয়ে জিসান হাত মেলান খালেদের সঙ্গে। গত এপ্রিলে দুবাইয়ে জিসান-খালেদ বৈঠক হয়। সেখানে সম্রাটকে হত্যা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বান্দরবান থেকে খালেদ পাঁচটি একে-২২ রাইফেল ঢাকায় আনেন।

এগুলোর মধ্যে গত ৩০ জুন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা ও খিলগাঁও থেকে দুটি একে-২২ রাইফেল উদ্ধার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চারজনের কাছ থেকে ডিবি জানতে পারে যে চাঁদাবাজির আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য জিসান-খালেদের নির্দেশে তারা এসব একে-২২ রাইফেল ঢাকায় এনেছিল।

হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আগেই সম্রাট বিষয়টি টের পান। এরপর থেকে সম্রাট ও খালেদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।

সম্রাট তার চলাফেরায় অনেকটা গোপনীয়তা নিয়ে আসেন। তাকে বহন করা গাড়ির আগে ও পেছনে অন্তত ছয়টি গাড়িতে ক্যাডার নিয়োজিত করা হয়।এসব ক্যাডারের কাছে ২০-২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে খালেদ গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। এমনকি বিশ্বস্ত কেউ না হলে তার সঙ্গে সাক্ষাতও বন্ধ করে দেন সম্রাট।

এদিকে অসামাজিক কার্যকলাপ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও সহ সভাপতি আরমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি এই দুজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় যুবলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু রোববার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

টিআর/