ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রযোজকের চাপে যৌন পেশায়, অতঃপর... 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৭ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার

দীপিকা পাডুকোন বা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো হয়তো সবাই এক নামে তাকে চেনেন না। তবে দক্ষিণী সিনেমায় আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন সুন্দরী নিসা নুর। এমন হিট নায়িকার জীবন কিন্তু ছিল হতাশায় ভরা। শেষ জীবনে অর্থকষ্টে রাস্তায় কাটাতে হয়েছে তাকে। গায়ে পোকা, মাছি বসে থাকত। শেষে এডস-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।

‘কল্যাণা আগাথিগাল’, ‘লায়ার দ্য গ্রেট’, ‘টিক! টিক! টিক!’-এর মতো প্রচুর হিট ফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। মূলত তামিল এবং মালায়লম ফিল্মই করতেন তিনি। অথচ সুন্দরী নিসা নুরের অভিনয়ের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। বালাচন্দন, বিষু, চন্দ্রশেখরের মতো এককালের নাম করা সব পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

শোনা যায়, দক্ষিণের সুপার স্টার রজনীকান্ত এবং কামাল হাসানও তার রূপে-গুণে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তার সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তারা। 

পরে দক্ষিণী এই দুই সুপারস্টারের সঙ্গেও টেলিভিশন স্ক্রিনে রোম্যান্স করতে দেখা গেছে নিসা নুরকে। এহেন জনপ্রিয়তাই শেষ পর্যন্ত ক্ষেত্রে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার জন্য। খুব তাড়াতাড়িই তার কেরিয়ারের ‘দি এন্ড’ হয়ে যায়। ভীষণ অপ্রত্যাশিতভাবেই আচমকা ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান নিসা নুর।

শোনা যায়, ওই সময় নাকি এক নাম করা প্রযোজকের খপ্পরে পড়েছিলেন এই দক্ষিণি সুন্দরী। ওই প্রযোজক তার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন। যৌন পেশায় নামতে বাধ্য করেছিলেন তাকে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কেউই আর তার সঙ্গে কাজ করতে চাইছিলেন না। বাধ্য হয়েই ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন নিসা নুর। 

কাজ হারিয়ে ক্রমেই আর্থিক দুরাবস্থার মধ্যে পড়েন তিনি। এমনকি দিনের পর দিন খেতে পেতেন না তিনি। এই সময়ে তার পাশে দাঁড়ানোরও কেউ ছিল না। এর কয়েক বছর পর ২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের একটি দরগার বাইরে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। কঙ্কালসার চেহারা, মলিন পোশাক, গায়ে পোকা, মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এসময় তিনি এতটাই শীর্ণ ছিলেন যে, মাছি তাড়ানোরও শক্তি ছিল না দেহে। দেখে বোঝার কোনও উপায়ই ছিল না যে, তিনিই সেই নিসা নুর।

ওই সময় তাকে চিনতে পেরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সেখানে চিকিৎসায় ধরা পড়ে যে, তিনি এইচআইভি-এইডসে আক্রান্ত। পরে ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।

এনএস/