নদীতে বর্জ্য ফেললে ট্যানারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: সালমান এফ রহমান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার

সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের(সিইটিপি) সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ সম্যসা সমাধান হয়ে যাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্ট সালমান ফজলুর রহমান বলেছেন, কঠিন বর্জ্যকে পণ্যে রূপান্তরিত করা শুরু হলে ৯০ ভাগ সমস্যা কমে আসবে।খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে যারা আগ্রহী তাদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।
এরপরও যদি ট্যানারী মালিকরা কঠিন বর্জ্য বা ক্রোম পাইপ লাইনের মাধ্যমে নদীতে ফেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ট্যানারী বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সাভারের হরিনধরা এলাকায় চামড়া শিল্প নগরীর অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, সিইটিপির সম্যসা দীর্ঘদিনের।এটি সমাধানে আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে খুব শিগগিরই এর কাজ শেষ করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।আমরা সিইটিপির বিষয়ে এর নির্মাণ সংস্থাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি।৬ সপ্তাহ পর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন এবং আজ যে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়েছে তা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তা সরেজমিনে এসে দেখা হবে।
এসময় বিভিন্ন ট্যানারী মালিক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, বর্তমানে আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি এবং ডিসেম্বরের মধ্যে লেভেল ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিওজি) অডিটের জন্য প্রস্তুত হতে পারবো। লেভেল ওয়ার্কিং গ্রুপ(এলডব্লিওজি)একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যারা সিইটিপিসহ পুরো চামড়া শিল্প নগরী অডিট করে বিষয়টি সার্টিফিকেশন করবে।
তিনি জানান, তাদের সার্টিফিকেশন পেয়ে গেলে বর্তমানে চামড়া রফতানি ক্ষেত্রে যে সমস্যা রয়েছে সেটি ঠিক হয়ে যাবে এবং এই খাত থেকে আরও বড় ধরনের রফতানি আয় হবে।তাই সিইটিপিকে অবশ্যই লেভেল ওয়ার্কিং গ্রুপ(এলডব্লিওজি) স্ট্যান্ডার্ড সম্পন্ন করতে আমাদের যা যা করা দরকার তাই করা হবে।
এছাড়া কঠিন বর্জ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, হাজারীবাগে যখন ট্যানারী ছিলো সেখানে কঠিন বর্জ্য কোনো সমস্যা ছিল না। সেখানে সব ধরনের কঠিন বর্জ্য পণ্য হিসেবে প্রক্রিয়াজাত করা হতো।কিন্তু এখানে যারা কঠিন বর্জ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে পণ্য উৎপাদন করবে তাদের জন্য কোনো যায়গা বরাদ্দ রাখা হয়নি। যার ফলে তারা এখানে এসে কাজটি করতে না পারায় কঠিন বর্জ্যগুলো জমা হয়েছে।
আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখানেও তাদের জন্য কিছু জায়গা দিয়ে দিবো। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য একটি কোম্পানী ২০ টন করে কঠিন বর্জ্য নিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা।
অন্যদিকে পাইপ লাইনে নদীতে সরাসরি বর্জ্য যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের দেলোয়ার হোসেন বলেন, কোরবানীর পর চামড়ার অতিরিক্ত চাপ থাকায় সিইটিপির পাইপ লাইনে ময়লা গিয়ে বাঁধার সৃষ্টি করছে ফলে কিছু পানি উপচে উঠে পরিশোধন ছাড়াই ড্রেনের মাধ্যমে নদীতে গিয়ে পড়ছে। নিয়মিত পাইপ লাইন পরিস্কার রাখা হলে এবং সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন হলে ডিসেম্বরের মধ্যে এই সমস্যা আর থাকবে না।
প্রসঙ্গত,গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২৩টি ট্যানারী শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে। ১৩০টি ট্যানারীতে স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে, ১১৪টি ট্যানারীতে পানির সংযোগ দেয়া হয়েছে, ট্যানারীর নিজস্ব ডিপ টিউবঅয়েলের মধ্যে ৫৭টিতে মিটার সংযোগ দেয়া হয়েছে।
আই/কেআই