ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দরজায় কড়া নাড়ছে হেমন্তের হিমেল হাওয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার

‘শুয়েছে ভোরের রোদ ধানের উপরে মাথা পেতে। অলস গেঁয়োর মতো এইখানে কার্তিকের ক্ষেতে। মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার—চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ,/তাহার আস্বাদ পেয়ে অবসাদে পেকে ওঠে ধান,...।’

শরতের শেষ। দরজায় কড়া নাড়ছে হেমন্তের হিমেল হাওয়া। আশ্বিনের অন্তিম নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে প্রকৃতিতে। বিদায়ী শরতের সাদা মেঘের ভেলায় ভাসতে ভাসতে আসছে হেমন্ত। কান পাতলেই শোনা যায় ঝরা পাতার গান। তবুও এখনও কাশফুলে ছেয়ে আছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। দিনের শেষ বেলায় নীল আকাশের নীচে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা।

বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্র্যের অবস্থানগত কারণেই হেমন্ত কিছুটা প্রচ্ছন্ন। শরৎকাল বর্ষারই প্রলম্বিত পর্যায়। শরতের শেষ ভাগে এসে বৃষ্টিবাদল কমতে থাকে। পেঁজা পেঁজা মেঘ ভেসে বেড়ানো ঝলমলে আকাশের গায়ে এসে লাগে কুয়াশার মলিন স্পর্শ। হেমন্তের শুরুটা সেখান থেকেই।

যদিও শহরাঞ্চলে হেমন্তের প্রকৃতি আপন বৈশিষ্ট্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। দিনগুলো ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে। বেলা ছুটে যায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে দ্রুত। রোদ তার তেজ হারিয়ে ফেলে। এসব দেখেই শহুরে লোকেরা অনুভব করে—বদলে যাচ্ছে ঋতু। শীত আসছে। হেমন্তের মাঝপথে শিশির পড়া শুরু হয়। দুর্বার ডগায় আটকে থাকা শিশিরবিন্দুতে ঝিকিমিকি করে ভোরের কিরণ। মেঠোপথে হাঁটতে গেলে পা ভিজে যায়। এ রকম কোনো পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার স্মৃতি, শিশিরভেজা শিউলি কুড়োনো ভোর—আজীবন সযতনে বুকে আগলে রাখেন অনেকে।

হেমন্তের অন্য নাম নবান্নের ঋতু। হেমন্তের পরিণতি শীতের আগামনী গানে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের দরজা খুলে দিয়ে শরতের বিদায়ের পালা।

তাই তো পল্লীকবি জসীম উদ্দিন লিখেছেন,

‘আশ্বিন গেল কার্তিক মাসে পাকিল ক্ষেতের ধান,/ সারা মাঠ ভরি গাহিছে কে যেন হলদি কোটার গান।’

এসএ/