ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

পদার্থে নোবেল প্রাপ্তির পর যা বললেন তিন বিজ্ঞানী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন সৃষ্টিতত্ত্ব বিজ্ঞানী প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির ‘অ্যালবার্ট আইনস্টাইন প্রফেসর’ জেমস পিবলস এবং জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইকেল মেয়র ও দিদিয়ের কুলোজ।

১৯৯৫-এ অক্টোবরের এক রাতে দুই বিজ্ঞানি দেখতে পান, সূর্য থেকে প্রায় ৫০ আলোকবর্ষ দূরে একটি তারাকে ঘিরে পাক খাচ্ছে গ্যাসের বলের মতো বস্তু। আয়তনে বৃহস্পতি গ্রহের মতো। পদার্থবিজ্ঞানের ‘ডপলার এফেক্ট’-এ তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বা আলোর রং বদল থেকে বোঝা যায় এর উৎস কাছে আসছে বা দূরে যাচ্ছে। 

সেই ‘ডপলার এফেক্ট’-কে কাজে লাগিয়ে মাইকেল মেয়র ও দিদিয়ে কুলোজ দেখেন, গ্যাসপিণ্ডটি একটি তারাকে পরিক্রমা করছে। সৌর জগতের বাইরে সেই প্রথম গ্রহের সন্ধান মিলল। নাম রাখা হল ‘ফিফটি ওয়ান প্যাগেসাস বি’। 

নোবেল জুরিদের মতে, এটা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী ঘটনা।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করতে গিয়ে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেসের মহাসচিব অধ্যাপক গোরান হানসন বলেন, বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণাটাই চিরতরে বদলে দিয়েছেন এই তিনজন। অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের তত্ত্বের ভিতে দাঁড়িয়ে পিব্‌লস অঙ্ক কষে দেখিয়েছেন, বিগ ব্যাং-এর পরে যে বিকিরণ ছড়িয়ে পড়েছিল, তার তাপমাত্রা ও পদার্থের পরিমাণের মধ্যে সম্পর্কটি কেমন। পিব্‌লসের তত্ত্ব থেকেই আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের এই মহাবিশ্বে বস্তুর পরিমাণ সামান্যই। মাত্র ৫ শতাংশ। বাকি ৯৫ ভাগই ‘ডার্ক ম্যাটার’ ও ‘ডার্ক এনার্জি’।

নোবেলপ্রাপ্তির পরে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির ‘অ্যালবার্ট আইনস্টাইন প্রফেসর’ পিবলস বলেছেন, তত্ত্বটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তবে আমাদের স্বীকার করতে হচ্ছে, এই আঁধার বস্তু বা আঁধার শক্তি আসলে কী ও কেমন, তা এখনও রহস্যে মোড়া।

৮৪ বছর বয়সি এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, পুরস্কার পাওয়া সত্যি মধুর। নবীনদেরও উচিত  বিজ্ঞানকে ভালবেসে এর চর্চায় আসা।

৭৭ বছর বয়সি মাইকেল মেয়র ও ৫৩ বছর বয়সি দিদিয়ের কুলোজ, দু’জনেই জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। কুলোজ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। নোবেলপ্রাপ্তির খবর পেয়ে তাঁরা দু’জন এক বিবৃতিতে বলেন, এক কথায় অসাধারণ ব্যাপার। আমাদের কর্মজীবনে সবচেয়ে উত্তেজনাময় ছিল ওই আবিষ্কারটি।

‘বিগ ব্যাং’ তথা মহাবিস্ফোরণের পরে কী ভাবে এই বিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে, তা বুঝতে বিশেষ সাহায্য করেছে পিবলসের আবিষ্কৃত তত্ত্ব। তাই তিনি পাবেন নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্যের অর্ধেক। ১৯৯৫ সালে প্রথম এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান দেওয়ার জন্য বাকি অর্ধেক ভাগ করে নেবেন মেয়র ও কুলোজ।

এএইচ/