ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সাংবাদিক এস এম আলীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২১ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

সাংবাদিক ও সম্পাদক এস এম আলীর (সৈয়দ মোহাম্মদ আলী) মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৩ সালের আজকের এই দিনে তিনি ব্যাংককের এক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

১৯২৮ সালে ৫ ডিসেম্বর সে সময়কার সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহকুমার বিখ্যাত আলী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এস এম আলী। তিনি সৈয়দ মোস্তফা আলীর বড় ছেলে। মোস্তফা আলীর বাবা সৈয়দ সিকান্দার আলী ডিস্ট্রিক্ট স্পেশাল রেজিস্ট্রার ছিলেন, যার দ্বিতীয় ছেলেও সুলেখক সৈয়দ মুর্তজা আলী ছিলেন রাজশাহী বিভাগের কমিশনার। তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতিও ছিলেন। তৃতীয় ছেলে সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন খ্যাতনামা সাহিত্যিক। সৈয়দ মোস্তফা আলী অবিভক্ত ভারতের সিলেট জেলার মহকুমা করিমগঞ্জে এসডিসি (সাব ডেপুটি কমিশনার) ছিলেন।

ছাত্রজীবন থেকেই এস এম আলীর সাংবাদিক হওয়ার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল ও বিভিন্ন কাগজে লিখতেন। ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করার পর সাংবাদিক জীবনে পুরোপুরি প্রবেশ করেন। ৫০ দশকে সাংবাদিকের জীবন খুব একটা মসৃণ ছিল না। ছিল না অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা। তবে এস এম আলীর বেলায় সেটি ছিল ভিন্ন। আসাম সিভিল সার্ভিসের উচ্চপদস্থ আমলা তার ঘরেই। আর সেই যুগে আমলাদের ছিল অপরিসীম ক্ষমতা। কিন্তু ক্ষমতার আকর্ষণ ত্যাগ করে সাংবাদিকের অজানা ও ঝুঁকিপূর্ণ জীবনে প্রবেশ করলেন তিনি। প্রথমে ঢাকার বিভিন্ন কাগজে কাজ করে করাচিতে পাড়ি দিলেন।

১৯৫০-৫১ সালে ছাত্রাবস্থায় ঢাকার ওয়ারী থেকে DACCA News নামে একটি ইংরেজি পত্রিকা বের করেন। সম্ভবত এটা ছিল এ দেশে ভারত বিভাগোত্তর প্রথম ইংরেজি পত্রিকা। তার জীবনের লক্ষ্য একটিই ছিল, সাংবাদিক হওয়া। লাহোরে দ্য ডেইলি পাকিস্তান টাইমস ও করাচির দ্য ডেইলি ডন পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি।

এস এম আলী পরে ১৯৬২ সালে হংকংয়ে এশিয়া ম্যাগাজিনে আসেন। তারপর দ্য ব্যাংকক পোস্টে সিনিয়র এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া দ্য নিউ নেশন, সিঙ্গাপুর (১৯৭১-৭২), দ্য হংকং স্ট্যান্ডার্ড (১৯৭৩-৭৫) ছিল তার কর্মক্ষেত্র।

আশির দশকের গোড়ার দিকে তিনি ইউনেস্কোর আঞ্চলিক যোগাযোগ উপদেষ্টা হিসেবে কুয়ালালামপুরে যান। একনাগাড়ে একযুগ কাজ করেন সেখানে। এরপর অবসর নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসেন ১৯৯০ সালের শেষ দিকে। তার উদ্দেশ্য ঢাকা থেকে একটা উচ্চমানের ইংরেজি পত্রিকা বের করা। যদিও ইচ্ছা করলে ইউনেস্কোর পেনশন নিয়ে তিনি এ অঞ্চলের যে কোনো শহরে অবসর জীবনযাপন করতে পারতেন। ব্যাংকক, হংকং, সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুরে তখন ঢাকা থেকে সাংবাদিক জগতে কাজ করার অনেক বেশি সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি ছিলেন একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক, যার দৃঢ় সংকল্প ছিল মরার আগে ‘দেশের জন্য কিছু করা দরকার’। ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে তার সর্বশেষ সৃষ্টি ‘ডেইলি স্টার’ প্রকাশিত হলো দেশের সাংবাদিক জগতে এক অনন্য তারকা হিসেবে। অচিরেই তা পাঠকসমাজে সমাদৃত হয়। পেলেন ভীষণ জনপ্রিয়তা। তার নিজস্ব কলাম ‘মাই ওয়ার্ল্ড’ ও প্রতিদিনের সম্পাদকীয়ই পত্রিকাটির বিশাল জনপ্রিয়তার প্রধান আকর্ষণ।

এসএ/