ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

যুবলীগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নতুন নির্দেশনা আসছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৪ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:৩৫ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

সাস্প্রতিক সময়ে শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ইমেজ সংকটে পড়েছে দেশের প্রথম যুব সংগঠন বাংলাদেশ যুবলীগ। দলের সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তাদের ওপর ক্ষুব্ধ। 

প্রশ্নে উঠেছে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ভূমিকা নিয়েও। ফলে, যুবলীগের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে দলটিকে।

হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবার সতর্কতার সঙ্গে এগোতে চায় দলটি। সে জন্য বেশকিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে যুবলীগের বিষয়ে নতুন করে নির্দেশনা আসছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। 

জানা গেছে, আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের সম্মেলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিবেন। ওই দিনই বিকেলে তার বাসভবন গণভবনে যুবলীগের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি। 

সে বৈঠকে সকল প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। তবে থাকবেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। 

বুধবার (১৭ অক্টোবর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন।

দেশের প্রথমসারির একটি পত্রিকাকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা জানান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও তাদের বিষয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি চান না রোববারের বৈঠকে তারা উপস্থিত থাকুক। 

এটি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে থাকবেন না সংগঠনটির বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। 

এদিকে রোববারের ওই বৈঠকে যুবলীগের সম্মেলনকে সফল করতে ১২টি উপকমিটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য দেওয়া হবে। একইসঙ্গে বৈঠকে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের সম্মেলনের তারিখও চূড়ান্ত হবে। এক্ষেত্রে ২২ নভেম্বর দুই মহানগর শাখার সম্মেলন হতে পারে। 

জানা গেছে, বর্তমান চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতে আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্য কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করতে পারেন। কে সভাপতিত্ব করবেন সেটি নির্ধারণের জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ওপর ছেড়ে দিবেন প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী রোববারের বৈঠকে ঠিক করে দিতে পারেন। 

শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগের মতো যুবলীগেও বয়সসীমা বেধা দেয়ার চিন্তা করছে দলটির নীতিনির্ধারকরা। আগামী ২৩ নভেম্বর দলটির দলটির সপ্তম কংগ্রেসকে সামনে রেখে নেতৃত্বের বড় পরিবর্তনের মাধ্যমে সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। যুবলীগ নেতাদের বয়স সর্বোচ্চ ৫০ বছর নির্ধারণ করার চিন্তাভাবনা চলছে।
 
প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে যুবলীগের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি। ওই সময় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪০ বছর বয়সসীমার বিধান ছিল। তবে ১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত সংগঠনটির দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসে ঐ বিধানটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর থেকে সময় যত গড়িয়েছে সংগঠনটির নেতৃত্বে এসেছে পঞ্চাশ থেকে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। বর্তমান যুবলীগ চেয়ারম্যানের বয়স ৬৪ বছর। 
 
আই/