ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শিল্পী সমিতির নির্বাচন

কার পালে হাওয়া বেশি?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০০ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৪০ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন চলছে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। নির্বাচনকে ঘিরে এফডিসি লোকে লোকারণ্য। নায়ক-নায়িকা চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পীরা ভোট দিতে আসছেন একে একে। আর এই তারকাদের দেখতে উৎসুখ জনতা ভিড় জমাচ্ছে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন- এফডিসির গেটে। নির্বাচন ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এফডিসিতে। নির্বাচনে সবার চোখ সভাপতি পদের দিকে। এ পদে দুজন জনপ্রিয় তারকা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের একজন চিত্রনায়িকা মৌসুমী এবং অন্যজন খলনায়ক মিশা সওদাগর। এফডিসিতে নির্বাচনের পরিবেশ দেখে বোঝা যাচ্ছে খলনায়ক মিশা সওদাগরের পালে হাওয়া বেশি। কারণ দেশের অধিকাংশ সিনিয়র তারকাই মিশার পাশে রয়েছেন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আশাবাদী মৌসুমীও।

এ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে ভোটগ্রহণ শুরু করেছি। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। ভোট দেয়ার জন্য আটটি বুথ রাখা হয়েছে।’

ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, ‘এবার ভোট গণনার সময় প্রার্থীরা ভেতরে থাকতে পারবে না। তবে ভেতরে সিসি ক্যামেরা থাকবে, বাইরে থেকে প্রার্থীরা সরাসরি ভোট গণনা দেখতে পারবে। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে, যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা না করতে পারে।’

নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়াই করছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খলনায়ক মিশা সওদাগর। সহ-সভাপতির দুটি পদে প্রার্থী হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল, রুবেল ও নানা শাহ। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস কোবরা। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আরমান ও সাংকো পাঞ্জা।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অভিনেতা সুব্রতর বিপরীতে কোনো প্রার্থী নেই। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়ছেন নূর মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ ও চিত্রনায়ক ইমন। দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে একাই রয়েছেন জ্যাকি আলমগীর। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে লড়বেন জাকির হোসেন ও ডন। কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা ফরহাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। সেই হিসেবে সুব্রত, জ্যাকি, আলমগীর ও ফরহাদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদ সদস্যের ১১টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১৪ জন। তারা হলেন- অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, বাপ্পারাজ, রঞ্জিতা, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, নাসরিন, মারুফ আকিব ও শামীম খান (চিকন আলী)।

এক দিকে মৌসুমী একা অন্য দিকে মিশার পাশে পুরো প্যানেল। কার জালে গোল হবে তা বোঝা যাবে আর কিছু সময় পরেই।

নির্বাচন নিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পপি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যারাই নির্বাচিত হোক না কেন আমি স্বাগত জানাবো। শিল্পী সমিতির কাজ শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা। আমরা দালালমুক্ত শিল্পী সমিতি চাই। সমিতি যেন সবদিক থেকে দালালমুক্ত থাকে।’

মৌসুমী বলেন, ‘পরিবেশ খুব ভালো লাগছে। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছেন। আশা করছি এভাবেই দিনটা আনন্দ করে শেষ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক কষ্ট হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভোটের দিনে মনে হচ্ছে আজ ঈদ। ৩০ দিন রোজা রাখার পর ঈদ পালন করছি। এই আনন্দ আরও বাড়বে যদি বিজয় আমার পক্ষে আসে।’

এক প্রতিক্রিয়ায় ফেরদৌস বলেন, ‘এফডিসির মধ্যে বাইরের লোকের আনাগোনার কারণে শিল্পীরা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে না। এ ছাড়াও নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। কিন্তু আজ এফডিসিতে এসে যে পরিবেশ দেখলাম সত্যিই অবিস্মরণীয়। এফডিসিতে এত সুন্দর পরিবেশ এর আগে দেখিনি। আমার মনে হয়, এমন পরিবেশ সবসময় থাকা উচিত।’

কড়া নিরাপত্তায় বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোটার ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচনের ভোটার কার্ড ও নির্দিষ্ট পাশ ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে প্রার্থী মিশা সওদাগর বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছেন নির্বাচন কমিশন। আমরা নিরাপত্তার ব্যপারে বেশ সন্তুষ্ট। তবে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে তা যাতে না হয় সে জন্য কাজ করা হচ্ছে।’
এসএ/