ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাকিব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৭ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৫২ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার

জুয়াড়িদের অনৈতিক প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। জানা গেছে, বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাকে ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে।

অনৈতিক অভিযোগের বিষয়ে জানা গেছে, দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে এক ক্রিকেট জুয়াড়ির (বুকি) কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। সেটি তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করলেও আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানিয়ে গোপন করেন সাকিব। 

আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট (আকসু) প্রতিনিধি সাকিবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সাকিবও বিষয় নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে সাকিবও নিজের ভুল স্বীকার করেছেন আকসু তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, সাকিব আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, জুয়াড়ির প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেননি বলেই জানাননি। বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়াটাই তার জন্য  কাল হয়েছে। ফলে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি। 

আজ মঙ্গলবার অথবা আগামীকাল বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আইসিসি জানাবে বলে জানিয়েছে বিসিবির একাধিক সূত্র।

এছাড়া বিসিবির একটি সূত্র জানায়, সাকিবকে শাস্তির ব্যাপারে জানিয়েছে আকসু। এ ব্যাপারে বিসিবিও আইসিসির ই-মেইল পেয়েছে। এক্ষেত্রে সাকিবের পাশেই থাকবে বিসিবি।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরীর ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য আইসিসি থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো ই-মেইল প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করেননি।

বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস করলেও কোনো উত্তর আসেনি। পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আইসিসি থেকে একটা কিছু আসবে শুনেছি। তারা কী পাঠাবে, জানি না।'

আকসুর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ক্রিকেটার, ম্যাচ অফিসিয়াল, টিম অফিসিয়ালসহ সরাসরি ক্রিকেটে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনৈতিক প্রস্তাব না জানিয়ে চেপে গেলে, লুকানোর চেষ্টা করলে বা আকসুর জিজ্ঞাসাবাদেও অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে ‘আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন’ ধারা ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৪, ২.৪.৫ ও ২.৪.৬ কার্যকর হবে।

এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ছয় মাস আর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে আইসিসি। সাকিব আকসুর জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করায় ১৮ মাস শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আপাতত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে আইসিসি।

শাস্তি কমানোর বিষয়ে সাকিব আবেদন করবেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। 

নিজের ভুল স্বীকার করে সাকিব আল হাসানের আশা, সাজার মেয়াদ হয়তো খুব বেশি দিন হবে না। 

আইসিসির ধারা ২.২.৪ থেকে ২.২.৬- এ অংশে অভিযুক্ত হয়েছেন সাকিব। যার শাস্তি সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হওয়া। তবে যেহেতু আকসুর সঙ্গে তিনি সহায়তা করেছেন এবং অতীতে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের রেকর্ড নেই, তাই আবেদন করলে সেটি কমে ছয় মাস করতে পারে আইসিসি। 

তবে এ জন্য বিসিবি নয়, সাকিবকেই শাস্তি কমানোর আবেদন করতে হবে। সাকিব আল হাসানের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা যায়, সাকিব এই আবেদন করার জন্য মানসিক এবং আইনি প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন।