ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পেঁয়াজের নিয়ন্ত্রণে বড় সিন্ডিকেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৩ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

দেশের ইতিহাসে পেঁয়াজ তার সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ২০ থেকে ২৫ টাকা দরের পেঁয়াজ ১৬০ টাকায় ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। এদিকে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি ও চেষ্টার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। বরং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজের যথেষ্ট পরিমান মজুদ থাকলেও সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে কিছু অসাধু আমদানিকারক।

এদিকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। আড়ত ভর্তি পেঁয়াজ। তারপরও বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখি রোধ করা যাচ্ছে না কোনও ভাবেই।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, টেকনাফ ও কক্সবাজারের একটি সিন্ডিকেট মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের নামের তালিকা কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই সিন্ডিকেট চক্র মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৯৫ টাকার কমে বিক্রি করছে না। অথচ এই পেঁয়াজের  আমদানি খরচ ৪২ টাকার বেশি পড়েনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজের বাজার মনিটরিং করছে। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে মনিটরিং টিমের সদস্যরা চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে পেঁয়াজের আমদানি ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে ব্যাপক কারসাজি পেয়েছে।

টিমের সদস্যরা জানান, সব খরচ মিলিয়ে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজি ৬০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। আর খুচরা বাজারে কেজি ৭০ টাকা হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর ইসলাম বলেন, ‘টেকনাফ ও কক্সবাজারের একটি সিন্ডিকেটের তথ্য পেয়েছি। এই সিন্ডিকেটে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন। তারা ৯৫ টাকা কেজির কমে পেঁয়াজ বিক্রি করছে না। আমরা এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের নামের তালিকা কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি।’

তিনি আরও জানান, আমদানিকারক, আড়তদার ও কমিশন এজেন্ট নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।

এদিকে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বাড়লেও কমার বিষয়ে কোনও সুখবর দিতে পারছে না বাণিজ্যমন্ত্রণালয়। বরং পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

টিপু মুনশি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১০ হাজার টন লটের পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। ১০ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ৫০ হাজার টনের লট আসতে শুরু করবে। তখন বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়বে।’

ভারত বেঙ্গালুরু জোন থেকে পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বেঙ্গালুরু থেকে ৯ হাজার টন পেঁয়াজ আসবে। তবে ভারতের যে অঞ্চল থেকে আমাদের দেশে পেঁয়াজ আসে (নাসিক) সেখানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। আমরা যোগাযোগ করছি, নিষেধাজ্ঞা যেন প্রত্যাহার করা হয়।’

আরও ১৫-২০ দিন বাজারে দামের প্রভাব থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আগাম পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। তবে এখনও সেভাবে ওঠেনি। এ মাসের শেষ দিকে নিজস্ব পেঁয়াজ উঠবে।’

টিপু মুনশি জানান, এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপ ১০ থেকে ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করবে। ইতোমধ্যে জাহাজে উঠে গেছে, যেকোনও সময় তা দেশে পৌঁছবে। এস আলম ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আনার পরিকল্পনা করেছে। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তা দেশে আসবে।

এসএ/