ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

আশা নিরাশার দোলাচলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

শেখ আরিফুজ্জামান, মালয়েশিয়া থেকে

প্রকাশিত : ১০:৩৫ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার পতাকা

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার পতাকা

আশা নিরাশার দোলাচলে মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার। একদিকে যেমন মন্ত্রীর আগমন, অন্যদিকে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতাসহ অভিবাসন ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে গুঞ্জন যেন জোরালো শব্দে পরিণত হচ্ছে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে।  

এছাড়া মন্ত্রীর আগমণে অবশেষে কি হতে যাচ্ছে তা জানতে অধির আগ্রহে প্রহর গুনছে শ্রমবাজারের সাথে জড়িত জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।

জানা গেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারসহ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ৬ থেকে ৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ার পূত্রজায়ায় সে দেশের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ মাহাথির সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীবর্গের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তারা।  

মূলত বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার পুন:রায় উন্মুক্তকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রধান্য পাবে এই আলোচনা সভায়। 

এদিকে, মালয়েশিয়ায় মন্ত্রীর আগমনের পর থেকে শুরু হয়েছে নানারকম কানাঘুষা। অনেকেই বলছেন, এর আগেও কয়েকবার সফর শেষে শ্রমবাজারের ফলাফল ছিল শুন্য। আবার কেউ কেউ বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নতুন করে সিন্ডিকেটের কবলে পড়তে যাচ্ছে নাতো! এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে। 

জানা গেছে, গত এক বছরে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এই শ্রম-বাজার উন্মুক্ত করতে কয়েক দফা মালয়েশিয়া সফর করেন এবং গঠন করেন জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারান বিভিন্ন সময় দেয়া তার বিবৃতিতে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শ্রমিকদের অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। 

এ অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির রিপোর্টে কিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। যা ৬ নভেম্বরের বৈঠকে চূড়ান্ত আলোচনা করা হবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা বাংলাদেশ সরকারকেই পালন করতে হবে। কারণ অভিবাসনপ্রত্যাশী শ্রমিক তার অভিবাসন ব্যয়ের সমুদয় অর্থ বাংলাদেশেই প্রদান করে থাকে। তাই আগামী বৈঠকে এই ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সুপারিশগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে বলে ওই সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পূত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে যাচ্ছেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। সেখানে রয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহিন, যুগ্ম সচিব মো. ফজলুল করিম, প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আজিজুর রহমান এবং বিএমইটি’র পরিচালক  মো. নুরুল ইসলাম।

মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের প্রত্যাশা কোনরকম সিন্ডিকেট ছাড়া নেপালিদের মতো বাংলাদেশীরাও যেন স্বল্প খরচে সকল সুযোগ-সুবিধা মোতাবেক মালয়েশিয়া আসতে পারেন। সেই জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করছেন তারা। ৬ তারিখের এই বৈঠকেই চূড়ান্ত হোক শ্রম-বাজার সংশ্লিষ্ট সব সিদ্ধান্ত সেই প্রত্যাশা সবার।  

এনএস/