ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

টাইগারদের সামনে আজ ইতিহাস সৃষ্টির হাতছানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১১ এএম, ৭ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সফরটা এতোটা রোমাঞ্চকর হবে তা হয় তো জানা ছিল না কারো। তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রথমটিতে জয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকরা। 

দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে টাইগাররা। এ ম্যাচের আগে মুশফিকদের হাতছানি দিচ্ছে নতুন ইতিহাস সৃষ্টির। চলমান এ সিরিজের এখনো দুটি ম্যাচ রয়েছে। একটিতে জিতলে প্রথমবারের মত ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জয় করবে বাংলাদেশ। তাও আবার স্বাগতিক ভারতের মাটিতে। 

এর মধ্যদিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরের এ খেলায় নিজেদের আরো সমৃদ্ধ করতে পারবে মুশফিকরা। তাইতো, শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে চায় না টাইগাররা। এ ম্যাচেই সে ষোলকলা পূর্ণ করতে চায় তারা। 

আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভারতের গুজরাট রাজ্যের রাজকোটের সৌরাস্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে।

প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচে বায়ুদূষণের তেমন একটা প্রভাব না থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় পণ্ড করে দিতে পারে এ ম্যাচ। তবে গতকাল বুধবার দেশটির আবহাওয়া জানিয়েছে, ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই ক্রমেই দুর্বল হতে থাকবে ঘূর্ণিঝড়টি। তাই, আশঙ্কা থাকলেও আপাতত ম্যাচের দিকে তাকিয়ে উভয় দল। 

চলতি বছর ৫টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। জয়ের হারে এটাই হবে বাংলাদেশের সেরা বছর।

অন্যদিকে, রাজকোটের এ মাঠে এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচে হেরেছে স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলো ভারতকে তাদের মাটিতে হারিয়েছে। তবে, তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রথমবারের মত হারের মুখে ভারত। তাই, রোহিতদের সে ক্ষতে লবণ দিতে মরিয়া মুশফিকরা।  

এর আগে ভারতের মাটিতে স্বাগতিকদের হারানো বাংলাদেশের জন্য একটা সময় ছিল অসাধ্য সাধনের মতোই ব্যাপার, কিন্তু প্রথম ম্যাচে জয়ের পর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্য কাজটা এখন আর অতটা কঠিন বলে মনে হচ্ছে না। আর মাত্র একটি ম্যাচ জিততে পারলেই বাংলাদেশে এই সিরিজে জয় পাবে।

মাঠে ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় কোণঠাসা বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি জিতে বেশ নাটকীয়ভাবে দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে।

নবীন খেলোয়াড়রা এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন। নাইম শেখ, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও আমিনুল বিপ্লব- এই তিনজন ক্রিকেটার নিজেদের দক্ষতা ও শারীরিক ভাষা দিয়ে দলের চিত্র অনেকটা বদলে দিয়েছেন। নাইম শেখ প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেই ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছেন, তিনি প্রথম ম্যাচ শুরু থেকে ব্যাট হাতে ভারতীয় বোলারদের সহজে উইকেট পেতে দেননি।

আফিফ হোসেন ধ্রুব, ৩ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন, টি-টোয়েন্টির বিচারে বেশ কিপটে বোলিং করেছেন তিনি। মাঠে নামার আগে সাকিব ও তামিমের অনুপস্থিতি নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হলেও, প্রথম ম্যাচে জয়ের পর তারুণ্য ও মুশফিক-রিয়াদের অভিজ্ঞতার মিশেলে বেশ নির্ভার একটা দল মাঠে লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বহু দিন যাবৎ একজন লেগস্পিনারের খোঁজে ছিল, সেটার অভাব মিটছে বিপ্লবের হাত ধরে।

বাংলাদেশ মূলত সিনিয়র নির্ভর ক্রিকেট থেকে খানিকটা হলেও সরে আসছে এখন। বাংলাদেশ দলের যে পাঁচ ক্রিকেটারকে ‘পঞ্চপান্ডব’ বলে বর্ণনা করা হয়, তাদের মধ্যে তিনজন ক্রিকেটারই এখন দৃশ্যপটে নেই। তাই এই একটি জয় সেই নির্ভরতা থেকেও বের করে আনছে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে। 
তবে লিটন দাসের ব্যাটে রান না আসা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ নেল ম্যাকেঞ্জির জন্য। ভারত নিশ্চিতভাবেই আরও বেশি প্রত্যয় ও আগ্রাসী হয়ে মাঠে নামবে।

দলপতি মাহমুদুল্লাহ তাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে ম্যাচ বাই ম্যাচ আগাতে চান। বলেন, ‘আগের ম্যাচ নিয়ে বসে নেই আমরা, এখন পরের ম্যাচ (আজকের ম্যাচ) নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমরা। আমাদের মানসিকতা ঠিক থাকতে হবে, তরুণ তিনজন ভালো করছে। তাদের সামর্থ্য আছে আরো ভালো করার। মানসিক বাধা অনেকটাই পেরিয়ে আসছি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেক বড় বড় মুহূর্ত আসবে, আমরা কতটা নির্ভার থেকে খেলতে পারি সেটাই এখন দেখার বিষয়।’

এআই/