ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

৩ যুবলীগ কর্মীকে কোপালো ইউপি চেয়ারম্যানের জামাই

সাভার সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৭:০১ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৭:৪৮ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার

আহত যুবলীগ কর্মী ফারুক ও ঘাতক রুবেল

আহত যুবলীগ কর্মী ফারুক ও ঘাতক রুবেল

রাজধানী ঢাকার অদূরবর্তী শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় যুবলীগের নেতাকর্মীদের কটাক্ষ করে ‘কাউয়া ও হাইব্রিড মুক্ত যুবলীগ চাই’ লেখা সম্বলিত ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার জেরে দুই যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টাসহ অন্তত তিন জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এ অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জামাতার বিরুদ্ধে। 

শনিবার (৯ নভেম্বর) আশুলিয়া থানায় ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের জামাতা রুবেল আহমেদ ভূইয়াকে প্রধান আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী রিপন মিয়ার স্ত্রী চায়না বেগম। 

এর আগে ভোর রাত ৩টার দিকে আশুলিয়ার বেরন এলাকার ক্রিয়েশন গার্মেন্টস এর সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত যুবলীগ কর্মী রিপন মিয়া ও বাবু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলো- আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহম্মেদ ভূইয়ার মেয়ের জামাই রুবেল আহম্মেদ ভূইয়া (৩৮), জামগড়া ভূইয়াপাড়া এলাকার ঝড়ু ভূইয়ার ছেলে উজ্জল ভূইয়া (৩৫), জসিম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হক ইমু (২২), জালাল মোল্লার ছেলে ময়না মোল্লা (৩৫), মোঃ সম্রাট (৩০), তমিজ মীরের ছেলে সুমন মীরসহ (২৮) অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, অভিযুক্তরা আশুলিয়া থানা যুবলীগের ব্যানারে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে থানা যুবলীগের সন্মানহানী করে আসছিলো। এ ঘটনায় থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার ফেস্টুন খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই মোতাবেক শুক্রবার রাতে যুবলীগ কর্মী রিপন মিয়া, ফারুক, শিপু, রিপন, বাবু ও নয়ন ইয়ারপুর ও জামগড়া এলাকায় অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার-ফেস্টুন খুলে পিকআপ গাড়িতে করে জামগড়া থেকে নরসিংহপুরের দিকে যাচ্ছিলো।

বিষয়টি জানতে পেরে রাত ৩টার দিকে অপপ্রচারকারী রুবেল আহম্মেদ ও তার বাহিনীর লোকজন যুবলীগ কর্মীদের গতিরোধ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গুরুতর আহত যুবলীগ কর্মী রিপন মিয়ার স্ত্রী বলেন, শুক্রবার রাতে ঝুট সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু রুবেল আহম্মেদ ভূইয়া আমার স্বামী রিপনকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে কোপ দিলে তার মাথা কেটে মগজ বের হয়ে আসে এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় রুবেল আহম্মেদ তার গলায় পারা দিয়ে ধরলে উজ্জল ভূইয়া হাতুড়ি ও ব্যানারের পেরেকযুক্ত কাঠ দিয়ে তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।

এছাড়া ময়না মোল্লা নামে আরেকজন রিপনের সঙ্গী বাবুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ও অন্যদেরকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় রিপন মিয়া ও বাবুকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদেরকে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার বলেন, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। এর আগেও তাদের অপপ্রচারের বিষয়ে আশুলিয়া থানা যুবলীগের সদস্য ও শিমুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আমির হোসেন জয় আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। 
তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার ফেস্টুন খুলে আনার সময় আমার কর্মীদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, যুবলীগ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং মামলার অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগেও রুবেল আহম্মেদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার ঝুটের ট্রাক ছিনতাই, বাড়ি দখল, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, মারধর, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আশুলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। 

এনএস/