ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভোলায় আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে উপকূলবাসী  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪০ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার

ভোলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যেই আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ কয়েক'শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে সকল বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৯২টি মেডিকেল টিম। জেলার সকল অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। 

শনিবার দুপুর থেকে বৃষ্টির প্রকোপ বেড়েছে। বইছে হালকা থেকে মাঝারি ঝড়ো হাওয়া। এছাড়া দুর্গম চরাঞ্চল থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রের লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নগদ ১০ লাখ টাকা, ২০০ ট্রিকটন চাল এবং ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় জেলা প্রশাসক আরও জানান, ভোলার ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চরনিজামসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে অন্তত ২ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার উপর বিশেষ জোর দেয়া হচ্ছে। গবাদি পশুর নিরাপত্তার জন্য জেলায় ৩৯টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, ৬৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনকে সকাল, দুপুর এবং রাতে খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি উঠতে পারে এমন আতঙ্কে রয়েছে উপকুলের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। বহু জায়গায় বেড়িবাঁধ না থাকায় এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ  বেড়িবাঁধের কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিন্মাঞ্চলে প্লাবনের আশঙ্কায় রয়েছে সেখানকার মানুষ। 

মনপুরা উপজেলা প্রভাশক শাহিন আলম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। অধিকাংশ স্থানে বেড়িবাঁধ না থাকায় সামান্য জোয়ারের পানিতেই তলিয়ে যায় উপজেলার অধিকাংশ নিন্মাঞ্চল। এখন ঘূর্ণিঝড় বুলবুল যদি আঘাত হানে তাহলে এ উপজেলায় বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। 

একই কথা বলেন ঢালচল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার বলেন, ঢালচর ইউনিয়ে প্রায় দশ হাজার লোকের বসবাস হলেও পুরো ইউনিয়নটি ফাকা। কোন স্থানে নেই কোন বেড়িবাঁধ। ইতোমধ্যেই এসব অঞ্চলের মানুষদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হলেও প্লাবনের আশঙ্কায় ঘড়বাড়ি নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছে তারা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, জেলায় প্রায় পৌনে চার'শ মিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু কিছু স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ থাকলে অধিকাংশ বেড়িবাঁধ নেই ।
   
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসমূহের কর্মকর্তাদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবস্থায় রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত  জেলার সকল অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল বন্ধ হয়েছে।

কেআই/আরকে