ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রদাহজনিত রোগ লিভার সিরোসিস

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৯ বুধবার

শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। এই অঙ্গটি সম্পর্কে অনেকের কোন ধারণা নেই এবং সচেতনতাও নেই। পৃথিবীতে যত জটিল রোগ রয়েছে তার মধ্যে লিভার সিরোসিস হলো একটি। লিভারের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের কারণে কিছু গুটি তৈরি হয়, তখন লিভার তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থাকে লিভার সিরোসিসের সঙ্গে গণ্য করা হয়। লিভার সিরোসিস হওয়ার পেছনের মূল কারণ ভাইরাসজনিত। 

হেপাটাইটিস 'বি' এবং হেপাটাইটিস 'সি' এ দুটি ভাইরাস থেকেই সাধারণত লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে। এছাড়া লিভারের চর্বিজনিত কারণে ফ্যাটি লিভার হয়, এদের যদি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ থাকে তাহলেও লিভার সিরোসিস হতে পারে। এছাড়া জন্মগত   হেমোক্লোম্যাটোসিস জাতীয় কিছু কিছু অসুখ থেকে এবং মদ্যপানজনিত কারণেও লিভার সিরোসিস দেখা দেয়।

সাধারণত আমাদের দেশে শিশু বয়সে যারা হেপাটাইটিস 'বি' আক্রান্ত হন, তারা ১০ থেকে ২০ বছর বয়সে অথবা ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সেও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হতে পারেন। আবার হেপাটাইটিস 'সি' হলো একটি ভাইরাস। রক্ত পরিসঞ্চালন বা কোনো অস্ত্রোপচারের কারণে হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত মাঝবয়সী লোকজনই বেশি আক্রান্ত হন। এদের ১০ থেকে ১৫ বছর পর লিভার সিরোসিস হতে পারে।

তবে লিভার সিরোসিসের প্রাথমিক লক্ষণ অনেকের ক্ষেত্রে বোঝা যায় না। কোনো লক্ষণ ছাড়াই ধীরে ধীরে লিভারের মধ্যে প্রদাহ হতে থাকে। তবে এটি বেড়ে গেলে পেটে অথবা পায়ে পানি চলে আসতে পারে। এছাড়া ক্ষুধামন্দা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। আবার জন্ডিসও হতে পারে।

যেসব কারণে লিভার সিরোসিস হয়, তা অবশ্যই বর্জন করতে হবে। বিয়ের আগে করাতে হবে স্ট্ক্রিনিং। অ্যালকোহল থেকে   নিবৃত থাকতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে এবং খাওয়ার সঙ্গে বাড়তি লবণ নেওয়া যাবে না। তবে কার্বোহাইড্রেট বা অন্যান্য খাবার স্বাভাবিকভাবে খাবেন। যদিও টিকার মাধ্যমে লিভার সিরোসিস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। এছাড়া সমস্যার শুরুতে যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায় এবং সেই অনুসারে ওষুধ সেবন করা যায়, তাহলো সুস্থ থাকা সম্ভব।

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, হেপাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

এএইচ/