ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গৃহবধূর আত্মহত্যা: ৫ লাখ টাকায় দফারফা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৯ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৯ সোমবার

গৃহবধূর আত্মহত্যার খবর প্রচারের পর দফারফা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকায়। পটুয়াখালীর বাউফল পৌর সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপাড়া এলাকায় গতকাল (১৭ নভেম্বর) রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। টুম্পা রাণী (২৩) নামে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই  গৃহবধূর প্রথমে স্ট্রোকে ও পরবর্তীতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা প্রচার করা হয়। কিন্তু আত্মহত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে মেয়ের পরিবার। তার স্বামীর নাম নিতাই সাহা। 

স্থানীয়রা ও নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা জানায়, পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে প্রায়ই শাশুড়ী ও জায়ের সঙ্গে ঝগড়া-ঝাটি লেগে থাকতো টুম্পার। সকালে শাশুড়ী পুষ্প সাহা ও জা (সঞ্জয় সাহার স্ত্রী) পিংকির সঙ্গে ঝগড়া হয় টুম্পার। এরপর ছেলে গৌরহরীকে (৬) স্কুলে পৌঁছে দিয়ে পুণরায় বাসায় ফিরলে কথা কাটাকাটির পর শাশুড়ী পুষ্প ও জা পিংকি মারধর করে তাকে। কিছু সময় পরে পুষ্প’র চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে রুমের ভেতর গলায় কাপড় পেঁচানো টুম্পার লাশ দেখতে পান প্রতিবেশিরা।

নিহত টুম্পার বাবা সন্তোষ সাহা আগের দিন বিচার চেয়ে মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি এ ব্যাপারে। এ ব্যাপারে টুম্পার ভাই মানোষ সাহা বশির নামে তার এলাকার একজন ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে এসে বোনের হত্যার বিচার দাবি করলেও বিভিন্ন কারণে ৫ লাখ টাকা নিয়ে থেমে যেতে হয়েছে বলে জানান। তবে বিভিন্ন কারণ সম্পর্কে বলতে রাজি হননি তিনিও। ৫ লাখ টাকায় রফাদফার বিষয়টি স্বীকার করেছেন টুম্পার অপর ভাই শুভ সাহাও। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী এক শ্রমীক লীগ নেতা নিহত টুম্পার দেবরের বন্ধু ও ফুফা মিলে টুম্পার বাবা ও স্বজনদের বাধ্য করে ৫ লাখ টাকা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের। ২০১২ সালে পৌর সদরের সাহাপাড়া এলাকার শক্তি সাহার ছেলে নিতাইয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় পাশের গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া গ্রামের সন্তোস চন্দ্রের মেয়ে টুম্পার।

বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। দফারফার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। হত্যা করা হয়ে থাকলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। কোন ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’ 

কেআই/আরকে