ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ভাল নেই সৌদি ফেরত সেই সুমি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৯ সোমবার

নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ১৫ নভেম্বর  সৌদি থেকে দেশে ফেরেন সুমি আক্তার। সেখানে থাকাকালীন নারী শ্রমিকদের ওপর নানামুখি নির্যাতনের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে। ফলে তাকেসহ অনেক নারীকে দেশে আনার ব্যবস্থা করে সরকার। 

কিন্তু দেশে ফিরলেও ভাল নেই সুমি। পড়েছেন নতুন সংকটে। শারীরিক অসুস্থতা আর স্বামীর হুমকি-ধামকিতে কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। 

সুমির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে যাওয়া ও নির্যাতনের জন্য তার স্বামী নুরুল ইসলামকে দায়ী করছেন তিনি। ফলে নুরুলের সঙ্গে আর সংসার করতে আগ্রহী নন এ গৃহবধূ। স্ত্রীর এমন পদক্ষেপে বেশ চটেছেন স্বামী। তাকে ঘরে আনতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। 

সুমির পরিবার চাইছে, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে নুরুল ইসলামসহ প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। একই সঙ্গে সরকারের কাছে সুমির কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়ে আসছে পরিবারটি।

সুমি উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ের বোদা থানার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গত ১৫ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্বামী নুরুল ইসলাম ও মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলেই বিমানবন্দরের অন্য গেট দিয়ে বের হয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের মাধ্যমে তাকে তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি। 

জানা যায়, বাড়ি ফেরার পর থেকেই সুমি ঘরের মধ্যেই সময় কাটান। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলছেন না। এছাড়া শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। চোখের কর্নিয়া সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এর মধ্যে নতুন করে স্বামী নুরুল ইসলাম তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সুমি জানান, প্রায় দুই বছর আগে তিনি গাজীপুরে মামার বাড়িতে থেকে সেখানকার এক সোয়েটার কারখানায় কাজ শুরু করেন। মামি শরিফা খাতুন আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার নুরুল ইসলামের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। 

একদিন বাইরে গেলে তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যান নুরুল ইসলাম। সাত-আট দিন আশুলিয়ার এক বাড়িতে আটকে রেখে অপ্রাপ্তবয়স্ক সুমির জাল জন্ম সনদ তৈরি করে জোর করে তাকে বিয়ে করেন। নুরুল মাদকচক্রসহ বিভিন্ন অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারপরও কষ্ট করে তার সংসার শুরু করেন সুমি। কিন্তু স্বামী তার বয়স ২৫ বছর দেখিয়ে পরিচিত দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেন।

সুমি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনও আমাকে সেই দুর্বিষহ নির্যাতনের দিনগুলো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাভাবিক হতে পারছি না। আমি আর নুরুলের সঙ্গে সংসার করতে চাই না। সৌদিতে গিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি তিনি আমাকে দালালদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন সংসার করতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সরকার আমাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি যেন নতুন করে আমার ভবিষ্যৎ গড়তে পারি সেই সহযোগিতা সরকারের কাছে চাইছি।’

এআই/