ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু, দরকষাকষিতে মীমাংসার চেষ্টা

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:১৬ পিএম, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

রাজধানী ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুরগাঁও নতুনপাড়া ২নং গলির অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিনের মালিকানাধীন বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নির্মাণ শ্রমিক আল-আমিন (১৮) নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানার রাহেনুর ইসলামের ছেলে। সে চারিগাঁও এলাকায় ভাড়া থেকে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতো।

নিহত শ্রমিক আল আমিনের লাশ হাসপাতালে রেখেই স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে দরকষাকষিতে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। 

এর আগেও একই ভবনে বেশ কয়েকটি  দুর্ঘটনা ঘটলেও ভবন মালিক আইনজীবি হওয়ায় ভয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি। স্থানীয় যুবলীগ ও ইউপি সদস্য বরাবরই তাকে বিপদমুক্ত রাখতে কাজ করছেন।

প্রতিবেশী বাড়ীর মালিক বিল্লাল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে নাস্তা করতে ছিলাম। এসময় মানুষের চিৎকার শুনে বাহিরে এসে দেখি বিদ্যুতের তারের সাথে রড লেগে আল আমিন নামের এক শ্রমিকের দেহ পুড়ে ভবনের নীচে পড়ে গেছে।

এসময় তার সাথে মনোয়ার হোসেন (৪০) নামের অপর এক শ্রমিকও আহত হয়। তাদের দ্রুত মির্জানগরের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হলে চিকিৎসক আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত শ্রমিকের মামা জাহেদুল ইসলাম বলেন, কুরগাঁও এলাকা থেকে তাকে মুঠোফোনে তার ভাগিনআর মৃত্যুর সংবাদ দেয়া হলে তিনি টাঙ্গাইলের শফিপুর থকে এসে গণস্বাস্থ্যের ভেতরে লামটি শনাক্ত করেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাড়ির মালিক ঝুঁকিপূর্ণভাবে তার ভবনের কাজ করাচ্ছিলেন। যেখানে বিদ্যুতের খোলা তার রয়েছে, সেই জায়গা দিয়েই ছাদে রড তুলতে গিয়ে আল আমিনের মৃত্যু হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যার সামিল। 

তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, এর আগেও শাহাবুদ্দিন উকিলের বাড়িতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একজন নিহত হয়েছে এবং ২০১৫ সালের জুন মাসে আনিসা নামের এক শিশু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে দুই হাত হাড়িয়ে এখন পঙ্গু অবস্থায় রয়েছে। 

এসব ঘটনা থেকে রক্ষা করতে বাড়ির মালিককে সহযোগীতা করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিউল আলম সোহাগসহ স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য শফিউল আলম সোহাগ বলেন, নিহত শ্রমিকের পরিবারের পক্ষ থেকে যে ধরনের অভিযোগ করবে, আমি তাদের সহযোগিতা করবো। মামলা-মকাদ্দমায় না গিয়ে আপোষ-মীমাংসা করে দেয়াই ভাল। 

এ বিষয়ে নিহতের মামা ও তার পিতার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে ভবন মালিক যদি বিল্ডিং কোড না মেনে কাজ করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। 

অভিযুক্ত ভবন মালিকের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনটি অন্য একজনকে দিয়ে রিসিভ করান। ওই ব্যক্তির নিকট এ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিনকে চাইলে তিনি সংযোগটি কেটে দেন। 

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক বদরুজ্জামান বলেন, স্থানীয়দের নিকট থেকে সংবাদ পেয়ে গণস্বাস্থ্যে নিহতের লাশটি রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে লাশটি থানায় নিয়ে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হবে। 

এআই/