ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

মোবাইল চার্জে দিয়ে কথা বললে হতে পারে বিস্ফোরণ! (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৩:৩৯ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার

কথা বলার সহজ মাধ্যম মোবাইল। যা এখন ছোট-বড় সবার হাতে। বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ এ প্রযুক্তিটি ব্যবহার করেন। তবে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হলেও, নানাবিধ কারণে এর ক্ষতিকর দিকগুলো আমাদের জীবনে বয়ে আনতে পারে ভয়ঙ্কর কিছু। 

দেখা যায়, মোবাইল ফোন চার্জে দিয়ে আমরা অনেকেই কথা বলি। কিন্তু এটি আমাদের জন্য কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে তা জানিয়েছেন রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু। 

একুশে টেলিভিশনের স্বাস্থ্য বিষয়ক ‘দি ডক্টরস’ অনুষ্ঠানে তিনি মোবাইল ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুকি নিয়ে কথা বলেছেন।

ডা. মনিলাল বলেন, ‘বিশ্বে ৩ বিলিয়নের বেশি মোবাইল ফোন আবিস্কৃত হয়েছে বা ব্যবহার হয়ে আসছে। এ মোবাইল ফোনগুলো থেকে একধরনের রেডিয়েশন নির্গত হয়। যা আমাদের শরীরে অত্যন্ত প্রভাব ফেলে।’

অনেকে ঘুমানোর সময় কানের পাশে মোবাইল রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। এর ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মোবাইল চার্জে দিয়ে কখনোই কথা বলা উচিত নয়। কেননা, তাতে রেডিয়েশনের মাত্রা বেড়ে যায়। এমনকি অনেক সময় বিস্ফোরণ হয়ে যায়, আগুন ধরে যায়। একইসঙ্গে কম চার্জ থাকা অবস্থায়ও কথা বলা যাবে না। ঘুমানোর সময় মাথার কাছে না রেখে দূরে রেখে ঘুমানোই উত্তম।’  

এ অধ্যাপক বলেন, ‘মোবাইল ফোনের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে এর থেকে যে রেডিয়েশেন বের হয়, তা দিয়ে মানুষের শ্রবণ শক্তি আসতে আসতে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মাথা ব্যাথার অন্যতম কারণও হতে পারে এটি।’ 

এছাড়া, গা ম্যাজম্যাজ করা, অস্বস্তি লাগা থেকে শুরু করে ব্রেন ক্যান্সার ও থাইরয়েড টিউমার হতে পারে। শরীরে যদি কোনো ধরনের ইলেক্ট্রিক অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার করেন তাহলে এর সঙ্গে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি, যারা পকেটে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তাদের অনেক বেশি বন্ধ্যাত্বের ঝুকি থাকে।

অনেকে মনে করেন আগে যে সাধারণ ফোনগুলো ব্যবহার করা হতো, তার থেকে অ্যান্ড্রয়েট ফোনে এ ধরনের ঝুকি কম। কিন্তু এ চিকিৎসক  বলছেন, এর কোনো ভিত্তি নেই। তার মতে, ‘এটা নির্ভর করে রেডিয়েশনের উপর। আমেরিকা পার্লামেন্টে আইন করে রেডিয়েশন নির্গত হওয়ার একটা মাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ 

বর্তমানে শিশুদের হাতে মোবাইলে তুলে দেয়ায় বাচ্চারা গেমসের দিকে ঝুঁকছে। এতে করে তারা এডিকশন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও, আমরা জানি যে, মোবাইল ফোনকে বলা হয়, ডিজিটাল কোকেইন। যা অন্যান্য মাদকাসক্তের চেয়ে ভয়াবহ ফল ডেকে আনতে পারে। এর মধ্যদিয়ে বোঝাযায়, এর ব্যবহার আমাদের জন্য কতটা ঝুকিপূর্ণ। 

তিনি বলেন, ‘এর ফলশ্রুতিতে মানুষ অন্যমনষ্ক হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে, বাচ্চারা পড়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অর্থাৎ, মূল জায়গা থেকে তারা দূরে সরে যাচ্ছে। এমনকি, অনেকে মোবাইল ফোনে অধিক চ্যাটিংয়ের কারণে চাকরি হারিয়েছেন।’ 

১৯০৮ সালে অল্টো নামে সর্বপ্রথম মোবাইল ফোন আবিষ্কার করে রাশিয়া, যার ওজন ছিল ১ দশমিক ৩ কেজি। এবং ১৯৪০ সালের দিকে জার্মানিতে বন এবং বার্লিনের মধ্যে যে ট্রেন চলতো, সেখানে ভিআইপি যাত্রীদের এটা দেয়া হতো। 

এরপর ১৯৬৭ সালে এসে ফিনল্যান্ডে আরো উন্নতি লাভ করে। ১৯৭৩ সালে আমেরিকায় ট্যাক্সিদের নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের হাতে এ মোবাইল তুলে দেয়া হয়। এরপর থেকে পৃথিবীব্যাপী বাণিজ্যিকভাবে এটি ছড়িয়ে দেয়া হয়। 

এআই/