ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আব্দুজ জহুর ব্রিজ এলাকায় বখাটেদের উৎপাতে বিপাকে শিক্ষার্থীরা 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৫:৫৯ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার

সুনামগঞ্জ শহরতলীর আব্দুজ জহুর সেতুর পার্শ্ববর্তী কুতুবপুর, অচিন্তপুর, বৈঠাখালী ও রাধানগর পয়েন্ট এলাকায় ভুমিখেকো ও মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিনত হয়েছে। বখাটেদের উৎপাতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। সেই সাথে মাদক ও ভূমিখেকোদের আস্তানায় পরিনত হয়েছে পুরো এলাকা। নিরীহ মানুষের জায়গা জমি ভুয়া কাগজাত সৃজন করে বেদখল করার অভিযোগ অহরহ।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে মডেল টাউনের জন্য জায়গা একুয়ার হওয়ায় ভুমিখেকোদের নজর পড়েছে এসব এলাকার অসহায় নিরীহ মানুষের জায়গা জমির উপর। আর এসবের সাথে জড়িযে পড়ছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভুমিখেকো, সুদখোর চাঁদাবাজ, খুন ধর্ষনের মত জগন্য মামলার আসামীরা। তাদের ভয়ে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ। অনেকে নীরবে নিভৃত্বে সহ্য করছে এদের অন্যায় অত্যাচার। 

একাধিক সুত্র জানায়, সরকার সারা দেশে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখালেও শহরতলীর আব্দুজ জহুর সেতু সংলগ্ন কুতুবপুর, বৈঠাখালী, অচিন্তপুর  রাধানগর এলাকায় পুলিশ, ডিবি কিংবা র‌্যাবের অভিযান নেই বললেই চলে। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও ধরাচোয়ার বাইরে মুল হোতারা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবী ও বিক্রেতাদের আনাগানো। খালি চোখে বুঝার কোন সুযোগ নেই যে এরাই মাদক সেবী ও মাদক বিক্রেতা। ভাল মানুষের মুখোশ পরেই চালিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ বিধংসী মাদক ব্যবসা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, আব্দুজ জহুর সেতুর পশ্চিম পার্শ্বের দক্ষিন ও উত্তর পার্শ্বে কুতুবপুর ও বৈঠাখালী গ্রামের সুরমা নদীর তীরবর্তি ছোট ছোট টং দোকানে চলে এসব ব্যবসা। প্রায় দেখা যায়, শহর থেকে দামী দামী মোটরসাইকেল নিয়ে যুবকদের উপস্থিতি এবং চলে মাদক, তীর শিলং  জুয়া ও ইয়াবার আসর। আরও জানা যায়, স্থানীয় শহিদ মিয়া ও মিনারুলের নেতৃত্বে চলে এসব ব্যবসা। এলাকার চিহ্নিত জালিয়াত ও ভুমিখেকো চক্রের হোতা নেছার আহমদ, শহিদ ও মিনারুলের নেতৃত্বে জাল জালিয়াত কাগজাত সৃজন করে এলাকার নিরীহ সাধারন মানুষের জায়গা জমি দখল করে রাখার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। 

কুতুবপুর গ্রামের সৈয়দুর রহমান চৌধুরীর পৈত্রিক সম্পত্তি ভুয়া কাগজাত সৃজন করে জোরামুলে উচ্ছেদ করেছে সিন্ডিকেট চক্র। স্থানীয় বিচার পঞ্চায়েতের লোকজনও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। নেছারের বাড়ী তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলি গ্রামের হলেও নানা মৃত সুরুজ আলী চৌধুরী’র অংশ পাওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক একর জমি। স্থানীয় নুর মিয়া জানান, নেছার আহমদ আমার খালাত ভাই। আমার নানা মরহুম সুরুজ আলী চৌধুরী জীবতবস্থায় অচিন্তপুর মৌজার এসএ ১৮৯৯ ও ১৯০৩ নং দাগের মোট ১.৮১ একর ভুমির মধ্যে তার প্রাপ্য ৬২ শতক ভুমি ১৯৮৫ সালে আজিজ মিয়া গংদের কাছে সাফ কবালা দলিল মুলে বিক্রি করে স্বত্ব ত্যাগী হন। তারপরও নেছার আহমদ ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে সৈয়দুর রহমানের পৈত্রিক সম্পত্তি স্থানীয় সন্ত্রাসী, মাদকসেবী ও একাধিক চাদাঁবাজী মামলার আসামী মিনারুল ও শহিদ মিয়ার নেতৃত্বে দখলের চেষ্টা করছে এবং সৈয়দুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছেন। স্থানীয় যুবক শাহীন জানান, নেছার আহমদ একজন ভুমিখেকো ও জালিয়াত  চক্রের হোতা। সে অনেক নিরীহ মানুষের জায়গা জমি দখল করে নিচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অনেক অভিযোগ রয়েছে। 

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সৈয়দুর রহমান চৌধুরী জানান, আমার পিতার মৌরসী স্বত্ব থেকে বেদখল করার চেষ্টা করছে নেছার গংরা। আমি সরকারী চাকুরী করায় প্রায়ই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করে হয়রানী করছেন। ইতিমধ্যে নেছারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ স্বয়ং আদালতে প্রমান দিয়েছেন নেছারের খালা ও আমার আপন চাচাত বোন লন্ডনে থেকেও তার নামে ভুয়া পাওয়ার অব এর্টনি সৃজন করে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে একুয়ারের অর্থ উত্তোলনের পায়তারা করেছিল। সেটা আদালতে উপস্থিত হয়ে বাতিল করেছেন আমার চাচাত বোন। 

এ ব্যাপারে নেছার আহমদ জানান, আমি কোন ধরনের জালিয়াতি করি নাই। আমি আমার নানার অংশসহ ক্রয়কৃত জমিটি ভোগ করে আসছি । 

আরকে//