ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নাগরিকত্ব বিলে উত্তপ্ত ত্রিপুরা, বন্ধ মোবাইল-ইন্টারনেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৮ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

মঙ্গলবার টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা

মঙ্গলবার টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা

উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ত্রিপুরা। নাগরিকত্ব বিলের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ১২ ঘন্টার জন্য মোবাইল-ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিপ্লব দেব সরকার।

উত্তর-পূর্বের প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের ডাকা ১১ ঘন্টার বনধকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ত্রিপুরা, কেন্দ্রের আনা বিলটি নিয়ে তাদের অভিযোগ, এই বিল জাতিগত পরিচয় হরণ করবে। আগরতলায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা, তারপরেই যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

সরকারের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু গুজব ছড়িয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টার খবর পুলিশ পাওয়ার পরেই, পরিষেবা বন্ধ করা হয়’।

এর আগে, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের ধালাই জেলার অন-উপজাতি মালাকানাধীন একটি বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের তরফে।

এদিনই আসামের গুয়াহাটি সহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন জায়গার জনজীবন থমকে যায়, বিলের প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের তরফে বনধ্ ডাকা হয়। মূল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন বিক্ষোভকারীরা, উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবরোধ করার কারণে, বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

আসামের বিভিন্ন অংশেও ব্যাপক প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে, স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিধানসভা ও রাজ্যের সচিবালয় সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। ডিব্রুগড় জেলায় সিআইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় বিক্ষোভকারীদের, দুলিয়াজানে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন আহত হন। এদিন সন্ধ্যা ৫টা নাগাদ বনধ্ প্রত্যাহার করা হয়।

২০১৫-এর আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই বিলে। দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তি, আন্দোলনকারী এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা অতি সত্ত্বর বিলটিকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন এবং সেটিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন, প্রস্তাবিত আইন থেকে বাদ দেওয়া হবে  উত্তর-পূর্বের অনেকটাই, বিক্ষোভকারীদের দাবি, এর ফলে এলাকায় প্রচুর সংখ্যক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়বে।

বিলটি পাশ হওয়াকে ‘মারাত্মক’ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, পাশাপাশি তাঁর দাবি এর ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ সেরাজ্যে ঢুকে পড়বে। সোমবার ৭ ঘন্টা উত্তপ্ত বিতর্কের পর, লোকসভায় বিলটি পাশ হয়, বিলের পক্ষে পড়ে ৩১১টি ভোট এবং বিপক্ষে পড়ে ৮০টি।

এসি