ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস ১৫ ডিসেম্বর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৪ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার

১৫ ডিসেম্বর ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনী যৌথভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে হানাদার মুক্ত করে। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, গোলাম নবী সাটুসহ নাম না জানা লক্ষ শহীদ তাদের বুকের রক্ত দিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জকে।

৭১’র মুক্তিযুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিলো ৭ নং সেক্টরের অধীনে। ৭নং সেক্টররের কমান্ডার ছিলেন লে. কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামান চেীধুরী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭নং সেক্টরের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহকুমায় ছিল ২টি সাব সেক্টর। একটি মোহদিপুর সাব সেক্টর  এবং অন্যটি দলদলী সাব সেক্টর। মোহদিপুর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং দলদলী সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন লে. রফিক।

৭১’র মার্চ মাসে সারা বাংলাদেশে যুদ্ধ শুরু হলেও প্রথমদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুদ্ধের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। ১৯ এপ্রিল রাতে শহরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে  আতংক সৃষ্টি করে পাক বাহিনী। শহর দখল করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা। এ ঘটনার  পরই পাকবাহিনীকে প্রতিহত করতে সংগঠিত হতে থাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা। প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে পাড়ি জমান তারা।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭ নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মকরমপুর ও আলী নগর পাকা ঘাটিতে অতর্কিত আক্রমণ চালালে ৫ পাক সেনা নিহত ও অন্যরা মহানন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়।

১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চর বাগডাঙ্গা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য অগ্রসর হয় এবং পাক সেনাদের বাংকার দখল করে নেয়। ১৩ ডিসেম্বর যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং ওই দিন  মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায় পাকসেনাদের বিরুদ্ধে। সেদিন রাতে হরিপুর ব্রিজের কাছে সংঘটিত যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর নায়েক নবির উদ্দীনসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা। এতে ৯ জন সাধারণ গ্রামবাসীও নিহত হয়।

দেশ শত্রুমুক্ত হবার দু’দিন আগে অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর জেলা শহরের মহানন্দা নদীর পাদদেশ রেহাইচর এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। এই খবর পেয়ে ৭নং সেক্টরের যোদ্ধারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং পরে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দীন, লে. রফিকুল ইসলাম, লে. আব্দুল কাইউম খান স্ব-স্ব বাহিনী নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর বিকালে আবার তুমুল যুদ্ধ শুরু করেন। পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর সকালে শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। উড়ানো হয় বিজয় পতাকা।
এসএ/