কসবায় মাটি-বালু উত্তোলনে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:০৯ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসমবা উপজেলায় এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী মাটি ও বালু উত্তোলনের নামে কৃষি জমির ক্ষতি করছে। বিশাল এলাকার মাঝে কম দামে জমি কিনে সেখান থেকে মাটি উত্তোলন করলে তৈরি হয় বিশাল আকারের গর্ত। তখন স্বাভাবিকভাবেই আশপাশের জমি ভাঙতে শুরু করে। এরপর ভয় দেখিয়ে ওই জমিও কেনা হয়। তারপর শুরু হয় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। এভাবে কৃষি জমির সর্বনাশ করে চলছে ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, এ কাজে জড়িত রয়েছে অর্ধশতাধিক প্রভাবশালী। এর মধ্যে জনপ্রতিনিধি এবং ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা জড়িত রয়েছে। অন্তত অর্ধশত ড্রেজার দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এসব মাটি ও বালু রেলওয়ের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক কাজের জন্য বিক্রি করা হয়।
এদিকে গত রোববার ড্রেজারবিরোধী উচ্ছেদ অভিযানে হামলার ঘটনা ঘটে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপর ওই হামলার ঘটনায় কসবা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও সাবেক যুবলীগ নেতা মো. আলমগীর, গ্রেফতার হওয়া মো. শামীমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ইতিমধ্যে অবহিত করা হলে স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এরই আলোকে গত সোমবার থেকে মাটি ও বালু উত্তোলনকারী এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের নাম সংগ্রহ করার কাজ শুরু করছে স্থানীয় প্রশাসন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশ্চিম ইউনিয়ন, কাইয়ুমপুর ইউনিয়ন ও বিনাউটি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি বালু উত্তোলন হচ্ছে। ড্রেজার লাগিয়ে এসব বালু বিক্রি করছেন উত্তোলনকারীরা। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে আশেপাশের জমির বেশ ক্ষতি হচ্ছে। আরও কয়েকটি এলাকার জমির প্রতি নজর রয়েছে বালু উত্তোলনকারীদের। আর এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় ৭৫ ব্যক্তি।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদউল আলম বলেন, এভাবে মাটি কেটে ও বালু তুলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে। আমার জানা মতে বর্তমানে কোথাও ড্রেজার মেশিন চলছে না। কসবায় যেন একটি ড্রেজারও না চলে সে বিষয়ে আইনমন্ত্রী মহোদয় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মহোদয়ও অভিযানের ব্যাপারে আন্তরিক আছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অবৈধভাবে মাটি ও বালু তোলার কাজে কারা জড়িত সে বিষয়ে তালিকা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই আলোকে সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জমির তালিকাও হচ্ছে। তালিকা তৈরির পর পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মামলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএইচ/