ঢাকা, বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

সুরমা নদীতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, আটক ৩

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

সুরমা নদীতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

সুরমা নদীতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সুরমা নদীতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিকালে তিন চাঁদাবাজকে হাতেনাতে অটক করেছে নৌ-পুলিশ। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে জামালগঞ্জের গজারিয়া এলাকার আলীপুর নদীর মোড়ে বালু-পাথর বোঝাই চলতি নৌকা থেকে চাঁদাবাজির সময় এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদের আটক করা হয়েছে। 

অটককৃতরা হলো- উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিব মিয়ার পুত্র আলী আকরব (২৮), শহীদ মিয়ার পুত্র রুবেল মিয়া (২৭), আতস আলীর পুত্র নিরাশ উদ্দিন (২৪)।

জনা যায়, ভৈরব-আশুগঞ্জ নদী বন্দরের একটি আদেশ নামায় জামালগঞ্জের গজারিয়া এলাকার সুরমা নদীতে টোল আদায়ের নাম করে চলতি নদীতে ৫’শ থেকে ১ হাজার টাকা করে প্রতি ভলগেট নৌকার মাঝিদের কাছ থেকে প্রতিদিনই লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। 

এ নদীতে চাঁদাবাজীতে যারা জড়িত তারা খুবই ভয়ঙ্কর। চাঁদাবাজদের সাথে স্থানীয় দুয়েকজন পাতি নেতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দীর্ঘ দিন ধরে এই নদীতে চাঁদাবাজী বন্ধের জন্য নৌ-শ্রমিকরা মানববন্ধন করে আসছিলেন।
 
নৌ শ্রমিকরা জানান, সরকারের শুল্ক স্টেশন থেকে রয়েলিটিকৃত এলসির মাধ্যমে কয়লা বহনকারী ভলগেট, বালু বহনকারী স্টিল বডি নৌকা, তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া, টেকেরঘাট, ছাড়াগাঁও শুল্ক স্টেশন থেকে কয়লা, ফাজিলপর, ছাতক, সুনামগঞ্জ, ভোলাগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন কোয়ারী থেকে বালু ও নুড়িপাথর, কয়লা, চুনাপাথর ক্রয় করে সারা দেশে যোগান দেয় ব্যবসায়ীরা। 

এসব আমদানিকৃত পণ্য বহনের মাধ্যম সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার উল্লেখিত এই নদীপথ দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছানো হয়। আর ওই পথে যাতায়াতের সময় নদীপথে ভলগেট, নৌকাগুলো চলাচলের সময় গজারিয়া নামক স্থানে এলেই নদীতে ইঞ্জিন চালিত ছোট নৌকা দিয়ে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে চাঁদাবাজ চক্রটি। সংঘবদ্ধ ওই চাঁদাবাজ চক্রটি প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে পাঁচ শতাধিক ভলগেট নৌকা থেকে ৫’শ থেকে ১ হাজার টাকা হারে চাঁদা আদায় করে বলে জানান ভূক্তভোগীরা। 

আর এসব পেশাদার চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজী তাদের কাছে যেন নিত্য-নৈমত্যিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের নিষ্ঠুরতা আর মারমুখী হুমকিতে ভলগেট নৌকার মাঝি-চালকরা আতংকিত অবস্থায় জীবনের ঝুকি নিয়ে চলছেন নদীপথে। এমন তথ্যই জানালেন ভুক্তভোগী মাঝি, চালক ও নৌযানের মালিকরা। চাঁদাবাজীর সাথে সম্পৃক্ত বাকীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: রুহুল আমিন বলেন, দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিকালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত তিন জন সুরমা নদীর আলীপুর নামক স্থানে চলতি নৌকা থেকে চাঁদা নিচ্ছিল, খবর পেয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। এসময় নগদ টাকা ও একটি ইঞ্জিন নৌকাও জব্দ করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, চাঁদাবাজদের আটকের কথা শুনেছি। এখনও কোন মামলা হয়নি, তবে মামলা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

এনএস/