ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

জীবন্ত আগ্নেয়গিরিকে সাক্ষী রেখে বিয়ে!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৬ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

আগ্নেয়গিরির উদগিরণ শুরু হলে মানুষ জীবন বাঁচাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। সহায়-সম্পদের পরোয়া না করেই ছুটতে থাকে নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে। সেই মুহূর্তে বিয়ে-সাধির কথা কেউ চিন্তাই করতে পারে না। কিন্তু ফিলিপাইনের বর-কনে আগ্নেয়গিরির উদগিরণের মধ্যে বিয়ে তো করেছেনই, এর সঙ্গে আগ্নেয়গিরিকে সাক্ষী রেখে ফটোশুটও করেছেন!

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে ৪০ মাইল দূরের জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। গত রবিবার থেকে সেখানে শুরু হয়েছে উদগিরণ। এর কালো ধোঁয়া আর ছাইয়ে আশপাশের এলাকা ঢেকে গেলে হাজার হাজার মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয় নিরাপদ দূরত্বে। তবে একইদিন  বিয়ের দিন নির্ধারিত থাকায় ওই এলাকা ছাড়েননি বর চিনো ভ্যাপলোর আর কনে কাট বাতিস্তা পালোমা। 

আগ্নেয়গিরি উদগিরণকে উপেক্ষা করে এর খুব কাছাকাছি একটি রিসোর্টে গত রবিবার সন্ধ্যায় বিয়ে করেন তারা। আকাশছোঁয়া ধোঁয়ার কুণ্ডলী পিছনে রেখেই বিয়ের ফটোশুটও করেছেন সাহসী এই নবদম্পতি। শুধু তাই নয়, অতিথীদের সাহসও জুগিয়েছেন তারা।

তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা যখন হচ্ছিল তখনও আগ্নেয়গিরির গর্জন শোনা যাচ্ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে। আকাশ ঢাকা ছিল কালো ধোঁয়ায়। পাশের রাস্তা দিয়ে নিরাপদ জায়গার খোঁজে ছুটছিল উদ্বিগ্ন মানুষ। তবে নবদম্পতি ও উপস্থিত অতিথিরা উদ্বিগ্নহীন থেকেই অনুষ্ঠান শেষ করেছেন।

ওই বিয়ের অনুষ্ঠানের আলোকচিত্রী র‌্যান্ডলফ ইভান বিবিসিকে বলেছেন, আমাদের একদমই মনে হয়নি বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। দুপুরের দিকে যখন আমরা কেন্দ্রে আসি, তখন আমরা কেবল দেখেছি ধোঁয়ার কুণ্ডলী তীব্র বেগে আকাশে উঠে যাচ্ছে। বিকেল থেকে মাঝেমধ্যে বিস্ফোরণের শব্দও আসছিল। তবে বর-কনে দুজনই মানসিকভাবে শক্ত থেকেছেন। তারা অন্যদের সাহস দিয়েছেন। তারা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি সাক্ষী রেখেই পরস্পরের হাতে হাত রেখেছেন। 

তিনি বলেন, কেবল বিয়ে ও ছবি তোলা নয়, সব আনুষ্ঠানিকতাই সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে। অতিথিরাও ছিলেন প্রাণবন্ত। তারা তাৎক্ষণিকভাবে আগ্নেয়গিরির ছবি শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ সময়ে সবার গায়েই ছাই এসে পড়ছিল। কিন্তু কাউকেই খুব বেশি উদ্বিগ্ন মনে হয়নি। বিস্ময়করভাবেই অনুষ্ঠানস্থলের সবাই ছিল শান্ত ও ফুরফুরে মেজাজে। 

তবে বিবিসি বলছে, রাত নামতে না নামতে ভয়ংকর হয়ে ওঠে আগ্নেয়গিরি। ভোররাত থেকে শুরু হয় লাভা উদগিরণ। ফিলিপিন্সের আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প ইনস্টিটিউট (ফিভোক্স) অগ্ন্যুৎপাতজনিত সতর্কতার মাত্রা ৩ থেকে বাড়িয়ে ৪-এ উন্নীত করেছে। এর মাধ্যমে আগামী কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যে বিপজ্জনক অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।

এএইচ/