ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বি. বাড়িয়ায় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন

জামায়াত কর্মীর পক্ষে আ’লীগের একাংশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:১৬ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২০ সোমবার

জমে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। এতে ৫১টি পদের বিপরীতে ২টি প্যানেলে ১০২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

মো. আবু কাউসার, মনির হোসেন ও বাবুল আহমেদ সরকার নেতৃত্বাধীন একটি প্যানেল এবং এটিএম রেজাউল করিম, মাহমুদ হাসান ও মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি প্যানেল। ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে উপজেলার ২১৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩১২ জন শিক্ষক ভোট দেবেন। 

তবে নির্বাচনে এক সভাপতি প্রার্থী রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আলীয়াবাদ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম রেজাউল করিম। 

প্রতিদ্বন্দ্বিরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে কয়েকদফা। চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্যকোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়ায় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর তার লিখিত বক্তব্য জানতে চেয়ে চিঠি দেন প্রাথমিক শিক্ষার চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সুলতান মিয়া। 

চিঠি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের মামলায় রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আদালতের রায় গোপন রাখা ছাড়াও কর্তব্য কাজে অবহেলা ও অনিয়ম এবং অসদাচরণের অভিযোগের সত্যতা থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। ওই বছরের ২৪ এপ্রিল আলীয়াবাদ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক শামসুল হক প্রধান শিক্ষক রেজাউলের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ দেন। 

অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জায়গা অবৈধভাবে দখল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয়ক্ষতির অপরাধে রেজাউল করিমকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে এক মাসের সাজা দেন তাকে।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত আহুত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনে পিকেটিংয়ে যোগ দিয়ে গাড়ি ভাঙচূর মামলার আসামি হন ওই শিক্ষক। তাছাড়া জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে আলোচিত ওই শিক্ষক। জানা যায়, ১৯৮৮-৮৯ শিক্ষাবর্ষে নবীনগর সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। 

ভৈরবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফা আক্তার লাকী বলেন, ‘সারাদেশে যেখানে জামায়াত নেই সেখানে নবীনগরে জামায়াত আছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইচ্ছে থাকলেও নির্বাচনে অংশ নিইনি। নবীনগর আ’লীগের একটি অংশ তাকে সমর্থন করছে। উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব শংকর দাসের ছবি ব্যবহার করে গত বিজয় দিবসে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেন রেজাউল।’ 

জানতে চাইলে নবীনগর উপজেলা আ’লীগের সদস্য ও পৌর মেয়র এ্যাড. শিব শংকর দাস এককভাবে কাউকে সমর্থন করছেন না জানিয়ে বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে দু’পক্ষেই আমাদের লোক আছে। রেজাউল এক সময় শিবির করত, এখন নয়।’

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন, ‘নির্বাচন আসলে কত কথাই উঠে। মামলা ডিসমিস হয়েছে। বিভাগীয় চিঠির জবাবও দিয়েছি।’ তবে জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

এআই/