ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৫ জন নিহত

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৫:০৬ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

মৌলভীবাজারে জুতার একটি দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারে ৫ জন পুড়ে মারা গেছেন। শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের পিংকী সু-ষ্টোর নামের ওই দোকানে সকাল সাড়ে ১০টায় ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এসময় দোকানের সাটার বন্ধ ছিল। এতে করে আগুন মুহূর্তেই দোকান থেকে ছড়িয়ে উপরের দোতলায় আধাকাঁচা ঘরে পৌঁছে যায়। এ সময় আগুনে পুড়ে মারা যান সেখানে বসবাস করা সুভাস রায় (৬০), তার মেয়ে প্রিয়া রায় (১৯) তার শ্যালকের স্ত্রী দিপা রায় (৩৫), দিপা রায়ের মেয়ে বৈশাখী রায় (২ বছর ৮ মাস) ও ভাইয়ের স্ত্রী দিপ্তি রায় (৪৫)। 

এ সময় প্রণয় রায় মনা নামে আরেকজন আহত হন। মনা রায়কে প্রথমে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউ সম্পৃক্ত একটি বে-সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানান মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান।

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ৪টি ইউনিট প্রায় ২ ঘন্টা কাজ চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে একে একে উদ্ধার করে ৫টি লাশ।

মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ হারুন পাশা জানান, “ঘরের ভিতরে একটি গ্যাস রাইজার ছিল। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে রাইজারে আগুন লাগে। দোতলায় এবং পেছনের বাসায় তারা থাকতেন। তাদের বের হওয়ার রাস্তা ছিলো দোকানের ভিতর দিয়ে। ফলে বের হতে না পারায় আগুনে পুড়ে মারা যান তারা।”

মৌলভীবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মল্লিকা দে জানান, “এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা করা হবে। একইসঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।”

মৌলভীবাজার সিআইডি ইন্সিপেক্টর বিকাশ দাশ জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের সাথে সিআইডির পুরো টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয়। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে গ্যাসের রাইজার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে পুরো বিষয়টি জানা যাবে বলে জানান তিনি। 

মৌলভীবাজার লাইফ লাইনে চিকিৎসাধীন প্রণয় রায় মনা জানান, “অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি তাদের দোকানের ২য় তলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আগুন আগুন বলে চিৎকার দিলে তিনি ঘুম থেকে উঠেন। তিনি জানান, কারেন্টের বোর্ড থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।”

লাশ উদ্ধার শেষে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

প্রতিবেশী ঝুনু রায় জানান, সুভাষ রায়ের বড় মেয়ে প্রিয়াংকা রায়ের বিয়ে হয় গত ২২ জানুয়ারি। বিয়ে উপলক্ষে অনেক আত্মীয় স্বজন এসেছিলেন তাদের বাড়িতে। সুভাষ রায়ের শ্যালকের পরিবারও তাদের বাসায় ছিলেন। 

এআই/এসি