নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হল বাংলাদেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪২ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার
অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, অপুষ্টি ও বায়ু দূষণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুর কারণ, যার ফলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে নিউমোনিয়া জনিত কারণে প্রতি ঘণ্টায় একজন শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ঢাকাঃ বিশ্বের প্রথম নিউমোনিয়া বিষয়ক গ্লোবাল কনফারেন্সে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিগণ নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু হার কমানোর জন্য বিশ্ব লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।
জানুয়ারির ২৯-৩১ তারিখ পর্যন্ত বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত এই ‘গ্লোবাল নিউমোনিয়া ফোরাম’ এ বাংলাদেশ থেকে দুইজন সরকারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- শামছুল হক, লাইন ডিরেক্টর, এমএনসিএন্ডআহ এবং শরীফুল ইসলাম, প্রোগ্রাম মেনেজার, ন্যাশেনাল নিউবরন হেলথ প্রোগ্রাম এন্ড আইএমসিআই। দুইজনই স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মনোয়ন পেয়েছেন। এই গ্লোবাল ফোরামে সেভ দ্যা চিলড্রেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন ডাঃ গোলাম মোতাব্বির, সিনিয়র পাবলিক হেলথ প্রফেশনাল।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও সেভ দ্য চিলড্রেন যৌথভাবে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিউমোনিয়ার বিরদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশে দশ বছরে প্রায় ১৪০,০০০ শিশুকে নিউমোনিয়া ও অন্যান্য বড় রোগের কারণে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।
নিউমোনিয়া বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর একটি শীর্ষস্থানীয় কারণ। এই রোগের কারণে দেশের ১৩% শিশু মৃত্যুবরণ করে যাদের বয়স পাঁচ বছরেরও কম হয়ে থাকে। তবে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সঠিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে, আগামী দশকের মধ্যে এই ভয়ঙ্কর অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যু হার কমানো সম্ভব।
এই গ্লোবাল ফোরামে জাতীয় সরকারি অধিবিশনে প্যানেলিসট হিসেবে শামছুল হক বলেন, “সরকার সফলভাবে একটি জাতীয় গাভি রূপান্তর কৌশল তৈরি করেছে যা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত উন্নয়ন কর্মসূচীতে অপারেশনাল পরিকল্পনায় একীভূত ও সংহত থাকবে। বাংলাদেশ সরকার একটি ট্র্যাক এবং ২০২৫ সালের মধ্যে নিউমোনিয়া জনিত কারণে শিশু মৃত্যুহার কমাতে জিএপিপিডি লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।“
শরীফুল ইসলাম এর সাথে যুক্ত করে বলেন, “পুষ্টি হীনতার ঘাটতি পূরণ করা এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি আমরা একটি জাতীয় নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশলের লক্ষ্য গ্রহণ করেছি যাতে করে টিকাদানের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ও সঠিক যত্ন নিশ্চিত করা হবে।“
নিউমোনিয়া গ্লোবাল ফোরাম থেকে ফেরার পর ডাঃ গোলাম মোতাব্বির বলেন, “বুকের দুধ খাওয়ানোর হার বৃদ্ধি এবং পুষ্টিহীনতার হ্রাস পাওয়ার ফলে শুধুমাত্র নিউমোনিয়া কমানোর ক্ষেত্রেই নয় বরং সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনেও অবদান রাখছে। আর এই জন্য আমরা সরকারের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। সেভ দ্যা চিলড্রেন এবং আমাদের অংশীদাররা দুর্বল জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে, নিউমোনিয়া বিষয়ক অর্থ নিয়ন্ত্রণ ও সকলের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিতের মাধ্যমে, স্বচ্ছতা ও জবাবতিহিতার সাথে প্রক্রিয়াগুলি ট্র্যাক করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সাথে একত্রে কাজ করে যাবে।“
উপযুক্ত পরিষেবা সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতের মাধ্যমে, নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে জীবনরক্ষক চিকিৎসা প্রদান ও কমিউনিটি পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবং পর্যাপ্ত ও সঠিক যত্ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সহজেই নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যু রোধ করা যায়।
আরকে//