ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

‘২১ বছর ধরে ৫০ টাকার নোটটি আমার পকেটে’

মিঞা মিজানুর রহমান কাজল

প্রকাশিত : ০৬:০৭ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

মিঞা মিজানুর রহমান কাজল

মিঞা মিজানুর রহমান কাজল

শূন্য পকেটে জীবন কাটিয়েছি বহু তারপরেও প্রতিজ্ঞা করা এই নোটটি আল্লাহ আমাকে খরচ করতে দেননি কোনদিনও। আলহামদুলিল্লাহ। বাবার মৃত্যুর ঠিক আগের দিন ১৯৯৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি হাত খরচের জন্য এটি আমাকে দিয়েছিলেন।

বাবা মা দুজনকেই হারিয়ে এতিম আমাকে জীবন সংগ্রামে যুদ্ধে নামতে হয়েছিল খুব অল্প বয়সেই। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মাঝে জীবন পার করেছি। তারপরেও বাবার রেখে যাওয়া পৈত্রিক কোন সম্পদ বিক্রয় করার চিন্তা করিনি কিংবা সামান্য এই টাকাটিও যত্নে রেখেছিলাম। ধৈর্য্য হারা হইনি কখনও। সৃষ্টিকর্তার উপর সব সময় ভরসা রেখেছি এবং বিশ্বাস রেখেছিলাম একদিন আমি অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারবই।

বাংলাদেশের সে সময়কার সমাজ ব্যবস্থা হিসাবে খুব কম বয়সেই আমি জীবন পরিবর্তন করতে পেরেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া যে বর্তমানে অনেকের চেয়েও অনেক ভাল আছি। জীবন এক অর্থে যেমন ছোট আবার অন্যদিকে অনেক বড়, তাই জীবনে যে কোন মূহুর্তে পরিবর্তন আসতেই পারে। আর সেই পরিবর্তন কিংবা বিপদের সময় ধৈর্যহারা হলে চলবেনা।

নিজেকে বেকার অবস্থায় ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে রেখে সারাদিন চিন্তায় হায় হুতাশ কিংবা শুধুমাত্র ৯টা থেকে ৫টা সময় মেপে অফিস করে মাস শেষে কিছু বেতন হাতে পেয়ে জীবনে কি পেলাম, না পেলাম বলে সৃষ্টিকর্তাকে অভিযোগ করে লাভ নেই! বর্তমান প্রজন্মের ধৈর্য্য ও সহ্য ক্ষমতা খুবই নগণ্য। খুব সহজেই তারা জীবনকে তাদের মত করে পেতে চায় অথচ জীবনটা এত সহজ নয়।

জীবন সংগ্রামের জন্য পথে নামতে হয়। ধৈর্য্য, পরিশ্রম, চেষ্টা, বুদ্ধি আর সাথে সৃষ্টিকর্তার দেয়া মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাতে পারলে সফলতা খুব দূরে নয়। হোক সেই সফলতা নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী যতটুকু প্রাপ্য ঠিক ততটুকু, নতুবা কোন কোন সময় তার চেয়েও বেশি।

আর সেইটুকু সফলতা পেয়েই শুকরিয়া আদায় ও প্রকাশ করতে হয়। এই শুকরিয়াটুকু না করে পিছনের ইতিহাস সব ভুলে গিয়ে শুধু আরও চাই আরও চাই, এইটা চাই সেইটা চাই করলে জীবন কখনওই পরিপূর্ণ হয় না কিংবা হবেও না। (লেখকের ফেইসবুক থেকে নেওয়া স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধারা হয়েছে।)

লেখক: মিঞা মিজানুর রহমান কাজল, কানাডা প্রবাসী।

এমএস/এসি