ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

কেউ আমাকে মেরে ফেলুক: বুলিংয়ের শিকার স্কুলছাত্র 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৯ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৯:১১ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের আদিবাসী কাডেন বেলস। বয়স নয় বছর হলেও সে অনুপাতে তেমন বাড়েনি। ফলে দেখতে অনেকটা ছোট দেখায়। এ নিয়ে সহপাঠীরা তাকে ‘বামন’ বলে খ্যাপায়। বুলিংয়ের শিকার শিশুটি সহপাঠীদের এই জ্বালা থেকে বাঁচতে জীবনের ইতি টানতে চায়। স্কুল থেকে ফেরার পথে তাই গাড়িতে কান্নাজড়িত অবস্থায় তার মাকে বলছে, ‘মা আমাকে ছুরি দাও, আমি নিজেকে মেরে ফেলতে চাই।’

মঙ্গলবার শিশুটির মা ইয়াররাকা বেলস ছেলের কান্নার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এরপর ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। পোস্ট হওয়া মুখোমুখি ছয় মিনিটের ভিডিওতে কাডেরেনের মা প্রতিদিন তার ছেলের দ্বারা নিরলস বর্বরতার বর্ণনা দেন। 

ছেলের কান্নার ভিডিওটি পোস্ট করে ইয়াররাকা বেলস বলেন, ‘বুলিং এটাই করে। আমি মাত্রই ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে ফিরছি। আজকেও সে বুলিংয়ের শিকার হয়েছে। আমি প্রিন্সিপালকে ঘটনাটি জানিয়েছি। আমি সবাইকে জানাতে চাই, সব মা-বাবা, শিক্ষক—সবাইকে, দেখুন বুলিং এই কাজটাই করে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু হয়। আপনারা কি আপনাদের সন্তান, পরিবার ও বন্ধুদের আচরণের বিষয়ে তালিম দিতে পারেন?’

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইয়াররাকা বলেন, সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমি ছেলের কান্নার ভিডিওটি পোস্ট করেছি। বুলিংয়ের কারণে আমরা প্রতিদিন স্বজনদের হারাচ্ছি। বুলিংয়ের মধ্য দিয়ে বৈষম্যের জন্ম হয়, বর্ণবাদের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেক মা-বাবার জন্য সন্তান হারানোর ব্যথা সবচেয়ে কষ্টকর। আর এটিই আমার প্রতিদিনের বাস্তবতা। তিনি বলেন, বুলিংয়ের কারণে কারও মনে আত্মহত্যার চিন্তা উঁকি দেওয়াও অবাস্তব কিছু নয়।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুলিংয়ের প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার তারকারা সরব হয়েছেন। অভিনেতা হিউ জ্যাকম্যান একটি ভিডিওবার্তা পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, যাই হোক তুমি আমার মধ্যে একজন বন্ধু পাবে। তিনি আরো বলেন, কাডেন তুমি নিজেকে যা ভাবো তার থেকে অনেক বেশি সাহসী ও শক্তিশালী তুমি। এছাড়া সবাইকে সচেতন করে তিনি বলেন, বুলিং কখনোই ভালো কিছু নয়। চলুন সবাই দয়া করে একে অন্যের প্রতি সদয় হই।

‘গো ফান্ড মি’ নামক একটি ফেসবুক পেজ খুলেছেন মার্কিন কৌতুক অভিনেতা ব্রাড উইলিয়ামস। সেখানে মোট ১০ হাজার ডলার সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করা হলেও এরইমধ্যে তাতে তিন লাখ ডলারের মতো উঠে গেছে।

উইলিয়ামস বলেন, এটি শুধুমাত্র কাডেনের পক্ষে নয়। এই পদক্ষেপটি এরকম প্রতিটি মানুষের জন্য যারা জীনবনে বুলিংয়ের স্বীকার হয়েছেন, যাদের বলা হয়েছে যে তারা যথেষ্ট ভালো নয়। তিনি আরো বলেন, চলুন সবাই মিলে কাডেন এবং অন্যদের দেখাই যে বিশ্ব এখনো ভালো অনেক কিছু আছে এবং তারা সেগুলোর যোগ্য।

 

টিআই// আরকে