ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মুশফিকের দৃঢ়তায় আড়াই’শ ছাড়িয়েছে লিড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৩:৫৯ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার

তামিম-ইমরুলকে ছাড়িয়ে মিডল অর্ডারে সর্বোচ্চ জুটি গড়ার দিনে সেঞ্চুরির পর ১৩২ রানে সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক মোমিনুল হক। তার বিদায়ের পরই স্বর্গীয় ব্যাটিং ক্রিজেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন মোহাম্মদ মিঠুন। তবে থেমে নেই মুশফিকুর রহিম। 

মিরপুরে একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিনে চালকের আসনে থাকা বাংলাদেশ এদিন জিম্বাবুয়ের বোলারদের রীতিমত ঘাম ঝড়িয়েছেন। 

দিনের শুরুতেই গতকালের ৭৯ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে সফরকারীদের বিপক্ষে প্রথম ও ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক মোমিনুল হক। তার অনবদ্য এ সেঞ্চুরিতে ভর করেই বড় পুঁজি পেয়েছে স্বাগতিকরা। তার সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যান আরেক অভিজ্ঞ টেস্টব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। 

তাদের জুটিতে আসে ২২২ রানের ঝলকানো এক ইনিংস। দলীয় ৩৯৪ রানের মাথায় এন্দোলভুর শিকার হওয়ার আগে ১৪ চারে ১৩২ রান করেন টাইগার দলপতি। 

তার বিদায়ে স্বর্গীয় ব্যাটিং ক্রিজে এসে হতাশ করেন মোহাম্মদ মিঠুন। ২৩ বল মোকাবেলা করে মাত্র ১৭ রানেই সেই এন্দোলভুর বলে চাকাবভার হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। 

তবে অটল রয়েছেন মি. ডিপেন্ডাবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। মোমিনুলের সঙ্গে অনবদ্য জুটি গড়া এ ব্যাটসম্যানও নিজের সপ্তম সেঞ্চুরি হাকান। 

এতদিন টেস্টে দুটি করে দুইশ রানের জুটি ছিল দুই ওপেনার তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েসের। দুই মিডলঅর্ডারেরও ছিল তাই।

তবে সেই রেকর্ডকে এবার ছাপিয়ে গেলেন মুমিনুল-মুশফিক। মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টেস্টে দুইশ রানের আরও একটি জুটি গড়ায় মিডলঅর্ডারে এর সংখ্যা এখন তিনটি। এরমধ্যে দুটিই অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৮ সালে এ ভেন্যুতেই চতুর্থ উইকেটে ২৬৬ রানের জুটি গড়েন তারা।

এর আগে একই বছর জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে শ্রীলংকার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ২৩৬ রানের জুটি।

সবমিলিয়ে টেস্টে দশমবারের মতো দুইশ বা এর বড় জুটি পেল বাংলাদেশ। এদিন চতুর্থ উইকেটে ৩১৬ বলে দুইশ রানের জুটি স্পর্শ করেন মুমিনুল-মুশফিক। আর ১৮০ বলে একশ করেন তারা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত টাইগারদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৪৮ রান। ক্রিজে মুশফিকুর রহিম ১৫০ ও লিটন দাস ১১ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। 

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। তবু এই টেস্টটা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সর্বশেষ ৬ টেস্টের মধ্যে ৫টিতেই ইনিংস পরাজয় দেখা টাইগারদের যে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিই পারে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে।

সেই আত্মবিশ্বাস ফেরানোর লড়াইয়ে বেশ ভালোই করছে স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই ওপেনার সাইফ ও তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান ডানহাতি সাইফ। পরের ওভারে তামিমের ব্যাট থেকেও আসে দুই চার। মাত্র ৩ ওভারেই ১৮ রান করে ফেলে বাংলাদেশ।

কিন্তু চতুর্থ ওভারের শেষ বলে হালকা বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট এগিয়ে দেয়ার ভুল করে বসেন সাইফ। ফলে তার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার হাতে। সমাপ্তি ঘটে সাইফের ১২ বলে ৮ রানের ইনিংসের।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আর বিপদ ঘটতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তামিম ইকবাল। দুজন মিলে ৪ ওভার খেলে যোগ করেন ৭ রান। পরে দ্বিতীয় সেশনেও দারুণ ব্যাট করেন এ দুজন। পাল্লা দিয়েই নিজেদের রান বাড়াচ্ছিলেন শান্ত ও তামিম। মনে হচ্ছিল, দুজনই তুলে নেবেন ফিফটি।

কিন্তু দলীয় ৯৬ রানের মাথায় অফস্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন তামিম। সমাপ্তি ঘটে তার ৮৯ বলে ৪১ রানের ইনিংসের, একইসঙ্গে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ১৫৯ বলে ৭৮ রানের জুটি।

তামিম না পারলেও বিরতির এক ওভার আগে ফিফটি তুলে নেন শান্ত। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করতে খেলেন ১০৮টি বল, হাঁকান ৬টি বাউন্ডারি। পরে বিরতির ঠিক আগের ওভারে মারেন আরও একটি বাউন্ডারি।

তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে নিয়ে শান্ত গড়েন ৭৬ রানের জুটি। কিন্তু ৫০তম ওভারে এসে বোকার মতো আউট হয়ে বসেন শান্ত। অভিষিক্ত তিশুমার বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১৩৯ বলে ৭ বাউন্ডারিতে গড়া শান্তর ৭১ রানের ইনিংসটি থামে তাতেই।

এআই/